ভোলাহাটে চাল বিতরণকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলায় ভিজিএফের চাল বিতরণ নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় রবিবার সকাল থেকে চাল বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে, যা নিম্নবিত্ত মানুষের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে গোহালবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বিএনপি নেতা আনোয়ারুল ইসলাম গ্রুপের কর্মী মাসুদ রানা ইউপি সদস্য নূর হোসেনের কাছে ভিজিএফ কার্ড দাবি করেন। তবে নূর হোসেন জানান, তার কাছে সীমিতসংখ্যক কার্ড রয়েছে, যা দিয়ে তার ওয়ার্ডের মানুষের চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়।

এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মাসুদ রানা ও তার ভাই মইনুর নূর হোসেনকে মারধর করেন বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পরপরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং বিএনপির অপর গ্রুপের সদস্যরা এসে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষের খবর পেয়ে প্রশাসন চাল বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।

গোহালবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইয়াসিন আলী জানান, ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় ২,৬৫০ জনকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সংঘর্ষের কারণে বিতরণ বন্ধ রাখা হয়েছে।

হামলার শিকার ইউপি সদস্য নূর হোসেন বলেন, “আমি কার্ডের সংখ্যা কম থাকায় মাসুদ রানাকে দিতে পারিনি, তবে তাকে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তিনি ও তার ভাই আমার ওপর হামলা চালান, যা পরে বড় সংঘর্ষের রূপ নেয়।”

অন্যদিকে, অভিযুক্ত মাসুদ রানা দাবি করেন, “আমি কার্ড চেয়েছিলাম, কিন্তু পাইনি। তবে কোনো মারধরের ঘটনায় জড়িত নই, শুধু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।”

ভোলাহাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইয়াজদানি জর্জ বলেন, “নূর হোসেন বিএনপির একজন কর্মী হলেও তিনি আমার অনুসারী নন। তাকে মারধরের ঘটনা শুনেছি, তবে এ ধরনের সংঘর্ষ দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”

সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে সংঘর্ষের পর থেকে এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষ চাল না পেয়ে ফিরে গেছেন, যা তাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে এবং চাল বিতরণ পুনরায় শুরু করা হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।