[email protected] বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
৩ বৈশাখ ১৪৩২

ভোলাহাটে হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে যাচ্ছে রাস্তার কার্পেটিং

আলি হায়দার রুমান

প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২৫, ১৪:০৮

ভোলাহাটে হাত দিয়ে টান দিতে উঠে যাচ্ছে এলজিইডি রাস্তার কার্পেটিং

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার এলজিইডি’র রাস্তার কার্পেটিং কাজে চরম ঘাপলা। হাতে দিয়েই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং।

স্থানীয় এলাকাবাসী কাজ বন্ধ করে দেয়ায় পুলিশ দিয়ে হুমকি খোদ দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ারের। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তার কার্পেটিং কাজ তদারকিতে উপজেলা এলজিইডির কর্মকর্তাদের গাফিলতি ও স্বজনপ্রীতি থাকায় কাজে চরম অনিয়ম হচ্ছে।

সরজমিনে দেখা যায়, দলদলী ইউনিয়নের ভোলাহাট-রহনপুর মূল সড়ক থেকে খরকপুর গ্রামের মাজেদার বাড়ি পর্যন্ত ৪২০ মিটার রাস্তার কার্পেটিং প্রকল্পের কাজ চলমান। প্রকল্পেটি টিপু সুলতানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হচ্ছে। তবে কাজের কোনো বিবরণী বোর্ড দেখা যায়নি। প্রকল্পের তথ্য জানতে চাইলে দায়িত্বরত উপসহকারী প্রকৌশলী তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করতে বলেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ যেসব অংশে কার্পেটিং শেষ হয়েছে, হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে যাচ্ছে। কার্পেটিং কাজ শেষ হতে না হতেই পুররাস্তা ভেঙ্গে খানাখন্দ তৈরি ও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। কতটা দুর্নীতি ও অনিয়ম হলে রাস্তাটি এমন পরিণত হয়। রাস্তাটি সংস্কারে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে কাজ করা হয়েছে, তাই হাতের টানেই উঠে যাচ্ছে।

শাজাহান আলী নামে একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, রাস্তাটি শুরু থেকেই দুই নাম্বারি হচ্ছে। ইট ও খোয়া গুলো দুই তিন নাম্বার। পিচ গুলো হাত দিয়ে উঠে যাচ্ছে।

মো. আব্দুর জাব্বার বলেন, রাস্তাটি দীর্ঘ দিন থেকে ভেঙ্গে ছিল। নতুন করে কার্পেটিং করছে কিন্তু নিম্নমানের ইট খোয়া দিয়েছে। পর্যাপ্ত বালি, পানি দেইনি। ডলনা দিয়ে ভালো করে না ডলে রাতের আঁধারে হালকা করে কালো মবেল ছিটিয়ে সকাল থেকে কার্পেটিং করা শুরু করে। এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে ঠিকাদার কাজ অব্যাহত রাখেছে।

সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের মো. লোকমান আলী বলেন, রাস্তাটি কাজ হচ্ছে নিম্নমানের। তিন নাম্বার ইট দিয়েছে, পানি বালি কিছু নাই। নামকাস্তে কাজ হচ্ছে। সাইডের ইট গুলো উঠে যাচ্ছে। রোলার দিয়ে ভালোভাবে ডলা হয়নি। এলাকাবাসী তাঁদের বলাতে আইনের হুমকি দেয়। কোনো সিডিউল বোর্ড নাই। আমরা চাই মানসম্মত কাজ হোক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলজিইডি অফিসের একজন বলেন, ডব্লিউ বিএম পানি দিয়ে ভালোভাবে ডলে তেল দেওয়ার পরে কার্পেটিং করতে হতো। এগুলো ভালোভাবে না করার জন্য কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। ওয়ার্ক এ্যাসিস্ট্যান্ট মো. আনোয়ার হোসনে বলেন, আমাকে কাজরে জন্য রাতে ডেকেছিল। আমি রাতে আসেনি। অন্য কিছু বলতে পারবো না।

রাস্তায় দায়িত্বরত ভোলাহাট উপজেলা এলজিইডি'র উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুজন রেজার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটা ছোট কাজ হওয়ায় কাজের বিবরণী বোর্ড টাঙ্গানোর কোন নির্দেশনা নাই। কাজ সুষ্ঠ ভাবে হওয়ার পরও এলাকাবাসী বাধা দিলে পুলিশ ডাকার কথা বলি। প্রকল্পের বিরবরণী বোর্ড না থাকায় তার কাছে তথ্য জানতে চাইলে, তিনি কাজের তথ্যের জন্য তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করে তথ্য নিতে বলেন।

এব্যাপারে ঠিকাদার টিপু সুলতান বলেন, আমি অসুস্থ মানুষ কাজের কাছে যেতে পারিনি। অফিস স্টিমেটের বাইরে কাজ করিয়ে নিচ্ছে। এখানে আমার আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা লস হবে। তারপরও এলাকার লোকজন কাজে বাধা দিচ্ছে।

ভোলাহাট উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. আহারাম আলীর সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ করেনি। পরে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও কোনো উত্তর মেলেনি।



আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর