রোববার (১৩ অক্টোবর) চাঁপাইনবাবগঞ্জে উদযাপিত হচ্ছে সনাতন ধর্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাদশমী।
এখন ঢাকের বাদ্য, কাঁসার ঘণ্টা, শঙ্খের আওয়াজ আর উলুধ্বনিতে মুখরিত জেলার ১৬৬ টি পূজা মন্ডপ। আজ মর্ত্য ছাড়বেন দুর্গতিনাশিনী। ফিরবেন কৈলাসে। অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ ও কল্যাণ এবং সব সম্প্রদায়েরমানুষের মধ্যে নিরন্তর শান্তি ও সম্প্রীতির আকাঙ্ক্ষা নিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আজ সমাপন ঘট শেষ হবে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার।
আজ শুভ বিজয়া। তিথির কারণে একই দিন দুর্গোৎসবের মহানবমী ও দশমী পূজা হয়েছে। গতকাল চাঁপাইনবাবগঞ্জের মণ্ডপগুলোতে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের প্রচন্ড ভিড় দেখা গেছে। ঢাকের বাদ্যির সঙ্গে মন্ত্রপাঠে আনন্দময়ীকে অঞ্জলি দেন ভক্তরা। পূজা ও সন্ধ্যা-আরতি শেষে বিদায়ের সুর বাজতে থাকে। শাস্ত্র অনুযায়ী—শাপলা, শালুক ও বলিদানের মাধ্যমে দেবীর পূজা হয়েছে। টানা পাঁচ দিন পর মা-দূর্গা মৃন্ময়ীরূপে মণ্ডপ মণ্ডপ থেকে আজ ফিরে যাবেন কৈলাসে স্বামী শিবের
সান্নিধ্যে। গতকাল মণ্ডপে মণ্ডপে ছিল বিদায়ের সুর। সাধারণত মহাষ্টমীর শেষ এবং মহানবমী তিথির সংযুক্ত সময়ে সন্ধিপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই সন্ধিক্ষণেই দেবী দুর্গার হাতে অসুর বধ হয়েছিল। গতকাল মণ্ডপে মণ্ডপে জড়ো হন অগণিত ভক্ত। পরিবার-প্রিয়জন নিয়ে আসেন দেবীকে শেষ বারের মতো দেখতে অনেকেই। মন্ত্র আর উলুধ্বনিতে মুখরিত থাকে মণ্ডপ।তাই ঢাকের বোলে
নিনাদিত হচ্ছে—‘ঠাকুর থাকবে কতক্ষণ ঠাকুর যাবে বিসর্জন’। বহু মণ্ডপের লাউড স্পিকারে মন্দ্রিত হয়েছে—‘নবমী নিশি যেন আর না পোহায়, তোকে পাবার ইচ্ছা মাগো কভু না ফুরায়...।’ হিন্দু বিশ্বাসে- বোধনে ‘অরুণ আলোর অঞ্জলি নিয়ে আনন্দময়ী মা উমাদেবীর আগমন ঘটে। মন্ত্রোচ্চারণের ভেতর দূর-কৈলাস ছেড়ে মা পিতৃগৃহে আসেন দোলনায় চড়ে। আজ বিজয়া দশমীতে
এয়োস্ত্রীদের দেবীবরণ ও সিঁদুর খেলার পর বিদায় নেবেন আবারও ঘোটকে।
আজ প্রতিমা বিসর্জনের আগে বিকালে বিভিন্ন মন্দির থেকে শোভাযাত্রা বের হয়, যা শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে মহানন্দা নদীতে গিয়ে শেষ হয় এবং রাত ৮টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জনের মেধ্য দিয়ে সমাপ্তি হয় শারদীয় দুর্গোৎসবের।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: