এবার চট্টগ্রামের সেই ঐতিহাসিক প্যারেড ময়দানের তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে ওয়াজ করবেন জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ইসলামি সমাজ কল্যাণ পরিষদ, চট্টগ্রামের উদ্যোগে আয়োজিত তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে অংশ নিচ্ছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের এক স্ট্যাটাসে তিনি এ তথ্য জানান। মিজানুর রহমান আজহারী লিখেছেন, চট্টগ্রাম বিভাগের বন্ধুরা, ইনশাআল্লাহ আগামীকাল থাকছি— ঐতিহাসিক প্যারেড ময়দানে, ইসলামি সমাজ কল্যাণ পরিষদ চট্টগ্রাম এর উদ্যোগে আয়োজিত তাফসিরুল কুরআন মাহফিলে। আসুন, দেখা হবে, কথা হবে।
৫ দিনব্যাপী এই মাহফিল ২৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে। ৩১ জানুয়ারি শেষ হবে। প্রধান মুফাচ্ছির হিসেবে মাহফিলের শেষদিন অংশ নিচ্ছেন ড. মিজানুর রহমান আজহারী।
২০০৬ সাল পর্যন্ত ঐতিহাসিক এই তাফসির মাহফিলের প্রধান আকর্ষণ ছিলেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। যিনি দীর্ঘ ২৯ বছর একাধারে সেখানে তাফসির মাহফিলে বয়ান করে গেছেন। ২০০৬ সালের ২০ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি প্যারেড ময়দানে সর্বশেষ তাফসিরুল কোরআন মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
এর পরের দুই বছর তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার এই মাহফিলের অনুমতি দেয়নি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আবার তাফসির মাহফিল আয়োজনের চেষ্টা করে ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ। ওই বছরের ২৯ মার্চ মাহফিল আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু করলে ওই দিন সরকারের নির্দেশে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) প্যারেড ময়দানে ১৪৪ ধারা জারি করে। এরপর থেকে একেবারেই বন্ধ হয়ে যায় এই আয়োজন।
বিগত সরকারের আমলে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনেককেই মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তুলে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু হয় জেলেই।
এবারের মাহফিলে সাঈদীর জায়গায় বয়ান করতে যাচ্ছেন ড. আজহারী। মাহফিলের প্রস্তুতি নিয়ে ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘প্রস্তুতি কাজ আরও আগে থেকে শুরু হয়েছে। এ উদ্দেশে তাফসির এন্তেজামিয়া কমিটি ও ১৯টি সাব-কমিটি নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। প্রস্তুতির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। নগরবাসীর মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। আশা করছি মাহফিলে বিপুল শ্রোতার সমাবেশ ঘটবে। আমরা অনুভব করছি, সেই তুলনায় মাঠটি যথেষ্ট নয়। তাই আমরা সমাবেশের সংকুলান ও শোনার সুবিধার্থে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’
অধ্যক্ষ মুহাম্মদ তাহের আরো বলেন, ‘প্যারেড মাঠের মূল প্যান্ডেলে এবার নারীদের প্যান্ডেল থাকবে না। স্বেচ্ছাসেবকগণ মাঠের নিয়মশৃঙ্খলা সংরক্ষণের দায়িত্ব পালন করবেন। সঙ্গে থাকবেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। মাহফিলে আসা নারী শ্রোতাদের আসা যাওয়া বসা ও শুনার সহজ ব্যবস্থার উদ্দেশ্যে এবার মূল মাঠের দক্ষিণে মহসিন কলেজের মাঠ, কাজেম আলী হাই স্কুল ও গুলজার বেগম হাই স্কুলে এবং মূল মাঠের উত্তরে কিশলয় কমিউনিটি সেন্টার ও কাপাসগোলা কলেজে প্যান্ডেল থাকবে।
প্যারেড মাঠের চতুর্দিকে দক্ষিণে আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদ মোড় ও জামালখান তথা চেরাগিপাহাড় মোড় পর্যন্ত, উত্তরে মেডিক্যাল কলেজ ও পাঁচলাইশ থানা মোড় পর্যন্ত, পূর্বে চকবাজার ধুনির পোল ও বাকলিয়া এক্সেস রোডের সুবিধাজনক অংশ পর্যন্ত এবং পশ্চিমে মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেল পরবর্তী সিজিএস স্কুল মোড় পর্যন্ত এলাকায় অবস্থিত মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মার্কেটগুলোর সদয় সহযোগিতা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ সব এলাকায় যেসব শ্রোতা সমবেত হবেন তাদের শোনার ব্যবস্থা থাকবে। যথাসম্ভব এলইডির ব্যবস্থা থাকবে।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: