সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে টানা ৪৫ ঘণ্টা অনশন করছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল ৫টা থেকে তাদের এ কর্মসূচি শুরু হয়।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অনশন চলছিল। সে হিসেবে টানা ৪৫ ঘণ্টা অনশন করছেন তারা। তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এদিকে, অনশন কর্মসূচির ফাঁকে কলেজটির প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায় দুপুরে জুমার নামাজ আদায় করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. নুরুজ্জামান বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাস্থলে এসে প্রায় দেড় ঘণ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু, সুনির্দিষ্ট কোনো আশ্বাস তিনি দেননি। এ কারণে শিক্ষার্থীরা তাদের অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
শুক্রবার পবিত্র জুমাবার হওয়ায় সকালেই ঘোষণা দেওয়া হয় যে, অনশনরত শিক্ষার্থীরা কলেজের প্রধান ফটকে জামায়াতে জুমার নামাজ আদায় করবেন। পরে তাতে আরও অনেক শিক্ষার্থী অংশ নেন। প্রায় দেড়শ শিক্ষার্থী একসঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে সরকারের একটি প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থলে যান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শিপ্রা রানী মণ্ডলসহ কলেজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
যুগ্মসচিব মো. নুরুজ্জামান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রায় আড়াই ঘণ্টা কথা বলেন। তারপরও শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি স্থগিতে রাজি হননি। তারা তিতুমীর কলেজকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়’ করার তাৎক্ষণিক ঘোষণা দেওয়ার দাবি করেন।
তবে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে ঘোষণা করা সম্ভব নয় বলে যুগ্মসচিব শিক্ষার্থীদের জানালে তারা বলেন, তাহলে যিনি ঘোষণা করতে পারবেন, তাকে ডেকে আনতে হবে।
দীর্ঘ সময় বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে যুগ্মসচিব নুরুজ্জামান বলেন, ‘তোমাদের দাবি যে অযৌক্তিক, সেটা তো কেউ বলছেন না। কিন্তু এটি একটি প্রক্রিয়াধীন বিষয়। তোমরা ২৮ বছর ধরে আন্দোলন করছো। এটা তোমরা আদায় করেই ঘরে ফিরবা, সেটাও আমরা জানি। কিন্তু এখনই বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা দেওয়াটা তো সম্ভব নয়। পরবর্তীতে যত জায়গায় এটা নিয়ে কাজ হবে, আমি সেখানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। তোমরা আজকে রাতে ফিরে যাও।’
যুগ্মসচিবের এমন বক্তব্যের পর শিক্ষার্থীরা তা মেনে না নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে স্লোগান দিতে শুরু করেন। শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন, ‘হয় তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়, না হয় মৃত্যু’। এ ঘোষণা দিয়ে রাতেও তারা গণঅনশন, রাস্তা অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: