ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আলোচিত উমানাথপুর গ্রামটি মাত্র ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি হয়ে গেছে। মাত্র ৪ জন জনসংখ্যার এই গ্রামটির মালিকানা গত ৪ মাস আগেই স্থানীয় আব্দুল মন্নাছের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল, তবে বুধবার (২৬ মার্চ) বিকেলে এই খবরটি প্রকাশ পায়।
২০২৪ সালের ২৪ জুলাই দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই গ্রামটি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে এটি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। ঈশ্বরগঞ্জের রাজিবপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত উমানাথপুর গ্রামটির মোট জমির পরিমাণ ২৫ শতক। সিরাজুল হক সরকার তার স্ত্রী ও সন্তানসহ মোট ৪ জন নিয়ে এই গ্রামে বসবাস করতেন। গ্রামটিতে দুটি বসত ঘর, একটি গোয়াল ঘর, একটি ছোট পুকুর, একটি টয়লেট এবং কিছু গাছপালা রয়েছে। অন্যের জমির আইল দিয়ে এই বাড়িতে প্রবেশ করতে হয়।
সরকারি কাগজপত্রে এই বাড়িটিকে কেন্দ্র করেই উমানাথপুর গ্রামের অস্তিত্ব স্বীকৃত। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই গ্রামের পাশে রয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদ। আশেপাশের গ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে রামগোবিন্দপুর, হরিপুর ও উদয়রামপুর। রাজিবপুর ইউনিয়নে মোট ৪৩টি গ্রাম রয়েছে, যার মধ্যে উমানাথপুরই সবচেয়ে ছোট।
সরকার পেশায় সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক ছিলেন। তিনি জানান, তার জন্য এত বড় বাড়ির প্রয়োজন ছিল না বলে তিনি এটি বিক্রি করে দেন। ১৫ লাখ টাকায় গ্রামটি বিক্রি করে তিনি পাশের অন্য একটি গ্রামে কম দামে জমি কিনেছেন এবং সেখানে নতুন বাড়ি তৈরি করবেন বলেও জানান।
গ্রামটি কিনেছেন পাশের উদয়রামপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মন্নাছ, যিনি ঢাকায় ফলের ব্যবসা করেন। তার ছেলে মোস্তফা কামাল জানান, তারা ১৫ লাখ টাকায় বাড়িটি কিনেছেন এবং রেজিস্ট্রিসহ মোট খরচ হয়েছে ১৭ লাখ টাকা। কেনার পরের দিনই তারা পরিবারসহ সেখানে উঠেছেন। এখন তাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৯ জন। মোস্তফা কামাল বলেন, এটি শুধু একটি বাড়ি নয়, একটি গ্রামের মর্যাদা পাওয়ায় তারা খুব খুশি।
সিরাজুল হক সরকার বলেন, "৬০ বছরের ইতিহাসের সমাপ্তি হলো। নতুন মালিকদের জন্য এটি ভাগ্যের ব্যাপার।"
আলোকিত গৌড়/এম.আর
মন্তব্য করুন: