[email protected] সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
৭ বৈশাখ ১৪৩২

প্রধান উপদেষ্টার নাম ব্যবহার করে পিয়নের কোটি টাকা আত্মসাৎ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫:২৮

পিয়ন মাহবুব আলম সুমনের ছবি/সংগৃহিত

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের পিয়ন মাহবুব আলম সুমন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম ব্যবহার করে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জড়িয়েছেন। এ ঘটনায় জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

জানা গেছে, গত ১৭ এপ্রিল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফজলুল কবির তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির প্রধান হিসেবে রয়েছেন সহকারী পরিচালক নওশের আলম, আরও দুই সদস্য হলেন সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ ও বন্দর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রফিক আবেদীন। কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

সোনারগাঁ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার জানান, পিয়ন সুমন গত ১৬ মার্চ থেকে অফিসে অনুপস্থিত এবং কোনো ছুটি নেননি। তার ফোনেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। তবে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত অপরাধের দায় অফিস নেবে না। 

প্রতারণার কৌশল 
মাহবুব আলম সুমন স্থানীয় শতাধিক মানুষকে প্রতারিত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি তাদের বলেছিলেন, ড. ইউনূস দরিদ্রদের প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা দেবেন, তবে এর জন্য "দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসংস্থান ব্যাংকে" ৬ হাজার টাকা জমা দিতে হবে। এভাবে তিনি অনেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন। টাকা নেওয়ার পর ভুক্তভোগীদের মোবাইলে মেসেজ পাঠানো হয়: *"আপনার অ্যাকাউন্টে ৫ হাজার টাকা জমা হয়েছে।"* পরে জানা যায়, ওই নামে কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই এবং মেসেজ পাঠানো নম্বরটিও ব্যাংকের নয়। শুধু একটি ইউনিয়ন থেকেই তিনি প্রায় ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। 

এছাড়াও তিনি বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আরও টাকা হাতিয়েছেন: 
- সরকারি ঘর পাইয়ে দেওয়ার নামে জনপ্রতি ১.৫ লাখ টাকা নেন (৫ লাখ টাকার ঘরের প্রতিশ্রুতি দিয়ে)। 
- দুধের গাভী দেওয়ার কথা বলে জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা নেন। 
- মাতৃত্বকালীন ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতার মতো বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার লোভ দেখিয়ে ২৫-৩০ হাজার টাকা করে আদায় করেন। 

কিছু ভুক্তভোগীকে তিনি নিজেই সামান্য টাকা ফেরত দিয়েছিলেন, যাতে তারা তার প্রতি আস্থা রাখেন। এভাবে তিনি বহু মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। 

এ ঘটনায় তদন্ত চলছে এবং দোষী প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

আলোকিত গৌড়/এম.আর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর