[email protected] সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
২৩ আষাঢ় ১৪৩২

জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটের আলোকে ক্যাম্পাস বিনির্মাণে রাজশাহী কলেজে ছাত্রশিবিরের স্মারকলিপি

মো: ইয়াজ উদ্দীন আহম্মেদ

প্রকাশিত: ৭ জুলাই ২০২৫, ১৪:২৫

ছবি- আলোকিত গৌড়

‎সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি পূরণের জন্য ও জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটের আলোকে ফ্যাসিবাদ মু্ক্ত ক্যাম্পাস বিনির্মান প্রসঙ্গে রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ বরাবর রাজশাহী কলেজ ছাত্রশিবিরের স্মারকলিপি প্রদান।

সোমবার (৭ ই জুলাই) সকাল ১১ টায় রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান মাসুমের নেতৃত্বে রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষের নিজ কার্যালয়ে অধ্যক্ষ বরাবর স্মারক লিপি জমা দেওয়া হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মুঃ যহুর আলী, কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মো: মোশাররফ হোসেন, সাহিত্য সম্পাদক হাফেজ আসমাউল হকসহ ছাত্রশিবিরের অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।

‎স্মারকলিপিতে তারা ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করেন।দাবিগুলো হলো -
১. সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের কর্তৃক ১৬ জুলাই ২০২৪-এ সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করার লক্ষ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
২. বিগত ফ্যাসিবাদের শাসনামলে হোস্টেলগুলোতে ছাত্র নির্যাতনের সাথে সম্পৃক্ত হোস্টেল তত্ত্বাবধায়ক এবং অন্যান্য সদস্যদের আইনের আওতায় এনে যথাযথ বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৩. পতিত ও পলাতক ফ্যাসিবাদের দোসর ও আইকনদের নামে রাজশাহী কলেজ ক্যাম্পাসে যে সকল স্থাপনার নামকরণ করা হয়েছিল, তা অবিলম্বে পরিবর্তন করে জুলাই বিপ্লবের শহীদ সাকিব আনজুমের নামে নামকরণ করতে হবে।
৪. রাজশাহী কলেজের জাদুঘর পুনরায় চালু করতে হবে এবং চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে স্মরণীয় করে রাখতে একটি বিশেষায়িত সেন্টার ও সংগ্রহশালা গড়ে তুলতে হবে। যেখানে অভ্যুত্থান সংশ্লিষ্ট ইতিহাস, গুরুত্বপূর্ণ ছবি, সাহিত্য, ম্যাগাজিন, প্রকাশনা, পত্রিকা ও চিত্রকর্ম ইত্যাদি সংরক্ষিত থাকবে।
৫. চব্বিশের জুলাই বিপ্লবে রাজশাহী কলেজের সাথে সংশ্লিষ্ট যে সকল ছাত্র-শিক্ষক ফ্যাসিবাদের ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করেছিল, প্রত্যক্ষভাবে গণহত্যাকে সমর্থন ও পরোক্ষভাবে গণহত্যার পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছিল তাদেরকে চিহ্নিত করে অতিদ্রুত তাদের বিরুদ্ধে একাডেমিক, প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
‎৬. বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে রাজশাহী কলেজ প্রশাসনের অভ্যন্তরে সংঘটিত সকল দুর্নীতির তথ্য শ্বেতপত্র আকারে প্রকাশের উদ্যোগ নিতে হবে এবং আইনী ব্যবস্থা নিতে হবে।
৭. ৩৬শে জুলাই নামে ভ্রাম্যমান লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

‎এ বিষয়ে কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান মাসুম বলেন,আমরা জুলাইকে সামনে রেখে বিগত বছরের জুলাইয়ে কলেজে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের হামলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আবারও কলেজ প্রশাসনকে জানানো হলো।কিন্তু দুঃখের বিষয় যে জুলাইয়ের হামলার প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত কলেজ প্রশাসন কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এছাড়া যে সকল শিক্ষক, কর্মচারীরা জুলাই আন্দলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলো তাদের বিরুদ্ধেও কোন ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। আমরা ছাত্র সংগঠনগুলো সবসময় চাই ছাত্রদের পক্ষে কাজ করতে। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা আবারও স্মারকলিপি প্রদান করলাম।

‎রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মুঃ যহুর আলী বলেন,আমরা স্মারকলিপি হাতে পেলাম, শিক্ষক পরিষদে বসবো এবং আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব। এর আগেও স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে সে প্রসঙ্গে বলেন, আমরা আগের স্মারকলিপি অনুযায়ী কিছু বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। তবে ১৬ ই জুলাই ২০২৪ এর হামলার বিষয়ে আমরা ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পায়নি এজন্য কোন ব্যাবস্থা নিতে পারছি না।তাছাড়া যারা হামলার সাথে জড়িত ছিলো তারা অধিকাংশ গা ঢাকা দিয়ে আছে যে দুএকজন সামনে আসছে তাদের ইতোমধ্যেই সাধারণ ছাত্র ছাত্রীরা পুলিশে সোপর্দ করেছে।

‎উল্লেখ্য গত একবছরে রাজশাহী কলেজ ছাত্রশিবির এর পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে এবং প্রত্যেকবারই জুলাইয়ে হামলার বিচার ও হোস্টেলে ছাত্রদের নির্যাতনের দাবি জানানো হলেও কোন প্রকার ব্যাবস্থা গ্রহণ করেনি কলেজ প্রশাসন।

আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর