সাফল্যের গল্প সবাই জানে, কিন্তু ব্যর্থতার গল্প কয়জনই বা জানে! অথচ প্রতিটি সফল মানুষের জীবনের পেছনে লুকিয়ে থাকে অসংখ্য ব্যর্থতা, হোঁচট আর নতুন করে শুরু করার গল্প। ব্যর্থতাকে ভয় না পেয়ে, বরং তা থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানাতেই প্রতি বছর ১৩ অক্টোবর বিশ্বজুড়ে পালিত হয় ‘আন্তর্জাতিক ব্যর্থতা দিবস’ (International Day for Failure)।
দিবসটির নাম শুনে অনেকেরই অবাক লাগতে পারে, কিন্তু এর পেছনে রয়েছে গভীর এক দর্শন। জীবনের যেকোনো ক্ষেত্রেই—পড়াশোনা, পেশা, ব্যবসা কিংবা সম্পর্ক—ব্যর্থতা আসবেই। কিন্তু সমাজে ব্যর্থতাকে প্রায়ই দেখা হয় লজ্জার বা অপমানের বিষয় হিসেবে। এই নেতিবাচক মানসিকতাই অনেককে নতুন কিছু করার সাহস থেকে বিরত রাখে। আন্তর্জাতিক ব্যর্থতা দিবস সেই মানসিকতার বিপরীতে দাঁড়িয়ে বলে—ব্যর্থতা কোনো পরাজয় নয়, বরং এটি নতুন সম্ভাবনার সূচনা।
দিবসটির সূচনা হয় ২০১০ সালে ফিনল্যান্ডে। সে সময় একদল তরুণ উদ্যোক্তা ও শিক্ষার্থী ব্যর্থতাকে ঘিরে থাকা ভয় ও সামাজিক লজ্জা ভাঙার উদ্দেশ্যে শুরু করেন একটি আন্দোলন। তাদের বার্তা ছিল স্পষ্ট—যে কেউ নতুন কিছু করতে গেলেই ভুল করবে, ঝুঁকি নেবে, আর সেখান থেকেই আসবে শেখার সুযোগ। এই চিন্তা থেকেই জন্ম নেয় ‘ফেইলিউর ডে’ বা ব্যর্থতা দিবস।
এরপর ধীরে ধীরে দিবসটি ফিনল্যান্ড ছাড়িয়ে পৌঁছে যায় বিশ্বের নানা দেশে। এখন বিভিন্ন স্থানে দিনটি উদ্যাপিত হয় সেমিনার, কর্মশালা ও উদ্বুদ্ধমূলক আলোচনার মাধ্যমে, যেখানে ব্যর্থতাকে সাহসের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হয়।
দিবসটির মূল বার্তা হলো—ব্যর্থতা মানেই থেমে যাওয়া নয়; এটি সাফল্যের পথে অপরিহার্য একটি ধাপ। প্রতিটি ব্যর্থতা শেখায় কীভাবে আরও ভালোভাবে কাজ করা যায় এবং কোন ভুলগুলো আর না করা উচিত। কারণ যারা ব্যর্থতাকে ভয় পায় না, তারাই একদিন নতুন কিছু সৃষ্টি করে বিশ্বের পরিবর্তন ঘটায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যর্থতাকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করার মানসিকতা আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, সৃষ্টিশীল চিন্তা জাগায় এবং ভবিষ্যতের সাফল্যের ভিত্তি তৈরি করে। তাই আজকের এই দিনে বার্তাটি একটাই— ভয় নয়, চেষ্টা করো; কারণ ব্যর্থতার মাঝেই লুকিয়ে আছে তোমার পরবর্তী সাফল্যের বীজ।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: