জীবনসঙ্গীর ব্যক্তিত্ব জানার চেষ্টা করুন। আপনাকে দেখানোর জন্য নয়, সাধারণভাবে তিনি কেমন তা বুঝুন। তাঁর শিষ্টাচার ও মৌলিক প্রকৃতি বুঝুন ও জানুন। সব মানুষ এক হয় না, তার পরও মানবিক হিসেবে কিছু নৈতিক গুণ থাকতে হয়। সে বিষয়গুলো জীবনসঙ্গীর মধ্যে দেখার চেষ্টা করুন। তিনি কতটা শান্ত, কিভাবে রাগান্বিত হন, আধিপত্যশীল কি না, কতটা আবেগপ্রবণ―এসব বুঝুন। জীবনসঙ্গী সাহসী কতটুকু, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কিভাবে জীবনকে দেখেন তা বুঝতে চেষ্টা করুন। আপনার সঙ্গে সাধারণ কথোপকথনের বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করুন। আপনার মতামতকে কতটা সম্মান দিচ্ছেন, আপনার কথা কতটুকু শুনতে চান তা বুঝুন। বিভিন্ন সামাজিক পরিস্থিতি বা সমস্যা কিভাবে সমাধান করছেন তা জানতে পারলেও জীবনসঙ্গীর প্রকৃতি সম্পর্কে আপনার ধারণা হবে।
আপনার জীবনসঙ্গীর সঙ্গে সংযোগ তৈরি করুন। সম্পর্কের শুরুর দিকে সংযোগ খুঁজুন। যে ব্যক্তির সঙ্গে আপনাকে আপনার জীবন কাটাতে হবে, তাঁর সাথে সঠিক সংযোগ স্থাপন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার সঙ্গে জীবনসঙ্গীর সব কিছুতে মিল থাকতে হবে এমনটা ভাববেন না। জীবনসঙ্গীর সঙ্গে কথোপকথনে এমন কিছু থাকা উচিত, যা আপনাকে সংযোগ তৈরি করতে সাহায্য করবে। একটি সুস্থ সম্পর্কে উভয়কেই অংশ নিতে হয়, মতামত প্রকাশ করার কোনো ভয় থাকে না―এ বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন। জীবনসঙ্গীর সঙ্গে যোগাযোগের স্বাধীনতা একটি সুখী সম্পর্কের অন্যতম ভিত্তি।
আপনাদের মধ্যে মিল ও অসামঞ্জস্যতা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। বিপরীত ভাবনা থাকবেই, কিন্তু সেই ভাবনা যেন সম্মান পায় তা খেয়াল রাখতে হবে। কথায় বলে, একটি বিয়ের সম্পর্ক আগুন ও বরফের মতো হওয়া উচিত। কেউ জ্বলে উঠলে, অন্যজন তা নিভিয়ে দেবে। সম্পর্ক উন্নয়নের প্রচেষ্টা জীবনসঙ্গীর মধ্যে কতটা আছে তা খেয়াল করুন। শুধু নিজের কথা ভাবে কিংবা আপনাকেই সব ভাবতে হবে, এমন সম্পর্কে ভবিষ্যতে সংকট আসার ভয় থাকে।
জীবনসঙ্গীর আইকিউ বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার সময় অন্যতম বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে বুদ্ধিমত্তা। একাডেমিক কিংবা ক্যারিয়ার রেকর্ডে জীবনসঙ্গীকে সফল থাকতে হবে―এমন নয় বিষয়টি। সামাজিক সম্পর্ক তৈরিতে, জীবনবোধ নিয়ে জীবনসঙ্গীর ভাবনা, কিংবা ভবিষ্যতের আর্থিক পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনায় আপনি বুঝতে পারবেন জীবনসঙ্গীর বুদ্ধিবৃত্তিক অবস্থান। একই কথা কিন্তু আপনার জন্যও প্রযোজ্য। ভাবুন তো, অন্ধকার রাতে দুজনে নির্জন কোনো দ্বীপে বসে আসেন। আপনার মনে অনেক গল্প, কিন্তু জীবনসঙ্গী বিষয়টি উপভোগ করছেন না। উপভোগ না করার অনেক কারণ থাকতে পারে, কিন্তু দারুণ এক অভিজ্ঞতার সুযোগ তৈরির পরেও জীবনসঙ্গীর উপস্থিতি নেই সেখানে। এমন কোনো মানুষকে আপনি জীবনসঙ্গী হিসেবে বাছাই করবেন?
জীবনসঙ্গী বাছাই করার সবার আগে সেই মানুষটিকে খুঁজে বের করুন, যিনি আপনাকে মানুষ হিসেবে সম্মান দেবেন। কোনো সম্পর্কে সম্মানের অভাব থাকলে সেখানে নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হয়। মানবিকতা একজন মানুষের শিক্ষা ও বেড়ে ওঠার মাধ্যমে তৈরি হয়। জীবনসঙ্গী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ভালো লাগার পাশাপাশি সঙ্গীর ব্যক্তিত্ব ও তাঁর মানবিক দিক সম্পর্কে আপনাকে জানতেই হবে।
মন্তব্য করুন: