ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা অবরোধের পর এবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল।
রোববার (৯ মার্চ ২০২৫) ইসরায়েলের জ্বালানি বিষয়ক মন্ত্রী এলি কোহেন গাজা উপত্যকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের এক আদেশে স্বাক্ষর করার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ইসরায়েল গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান আরও জোরদার করার ইঙ্গিত দিয়েছে।
ভিডিও বার্তায় কোহেন বলেছেন, ‘‘আমি আজ গাজা উপত্যকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার আদেশে স্বাক্ষর করেছি। জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে এবং যুদ্ধের পরের দিন থেকেই গাজায় হামাসের অস্তিত্ব না থাকার বিষয়টি নিশ্চিতে আমরা আমাদের সব ধরনের উপায় ব্যবহার করব।’’
গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের এই সিদ্ধান্তের তাৎক্ষণিক প্রভাব এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তবে গাজা উপত্যকায় বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ ব্যবস্থা ইসরায়েলি বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হলে পানির প্ল্যান্টগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা গাজার ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দার জন্য মারাত্মক সংকট তৈরি করতে পারে।
এর আগে, গত এক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় সব ধরনের খাদ্য সরবরাহ অবরোধ করে রেখেছে। এবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার মাধ্যমে ইসরায়েল গাজায় হামাসের ওপর চাপ বৃদ্ধির নীতি অব্যাহত রেখেছে। ইসরায়েলের লক্ষ্য হলো, গাজায় প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর পরিবর্তে হামাসকে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তে আলোচনায় বসতে বাধ্য করা।
গত সপ্তাহে প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। হামাস যুদ্ধবিরতির আলোচনার প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে বাকি জিম্মিদের অর্ধেকের মুক্তি দাবি করেছে। তবে হামাস প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর পরিবর্তে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তে আলোচনায় রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছে। রোববার (৯ মার্চ) ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই গোষ্ঠী মিসরীয় মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনা গুটিয়ে ফেলার পাশাপাশি যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে আলোচনা শিগগিরই শুরু করার আহ্বান জানিয়েছে।
জ্বালানি মন্ত্রী এলি কোহেন ইসরায়েলের বৈদ্যুতিক কর্পোরেশনের কাছে গাজায় বিদ্যুৎ বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। গাজার বেশিরভাগ এলাকা ইতিমধ্যেই যুদ্ধে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। সেখানে জেনারেটর ও সৌর প্যানেলের মাধ্যমে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও, ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তের পর গাজার বিদ্যুৎ সংকট আরও তীব্র হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের মানবিক সংকট আরও গভীর হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইতিমধ্যেই ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে এবং গাজায় মানবিক সহায়তা পুনরায় চালু করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আলোকিত গৌড়/এম.আর
মন্তব্য করুন: