সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের আমলের সংবিধান বাতিল করে শরিয়াহ বা ইসলামী আইন চালুর ঘোষণা দিয়েছে দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা অস্থায়ী সংবিধানের খসড়ায় স্বাক্ষর করেছেন। এ ঘোষণার মাধ্যমে সিরিয়া এখন থেকে শরিয়াহ আইনের ভিত্তিতে পরিচালিত হবে।
গত ডিসেম্বরে সুন্নী ইসলামপন্থী সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) বিদ্রোহীরা তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেন। এরপর থেকেই সিরিয়ায় রাজনৈতিক পরিবর্তনের জল্পনা শুরু হয়। নতুন সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে দেশ পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে অংশ নেওয়া নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে নতুন সংবিধান প্রণয়নের প্রক্রিয়া শুরু করেন। এ লক্ষ্যে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির সদস্য আব্দুলহামিদ আল-আওয়াক সাংবাদিকদের জানান, বাশার পরিবারের আমলের সংবিধান বাতিল করা হয়েছে। নতুন সংবিধানে রাষ্ট্রপ্রধানকে ইসলাম ধর্মাবলম্বী হতে হবে এবং আগামী পাঁচ বছর দেশ ইসলামী আইন অনুযায়ী পরিচালিত হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা পুরনো সংবিধান বাতিল ও নতুন সংবিধান চালুকে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, এই পরিবর্তন সিরিয়ার জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সিরিয়ায় এই রাজনৈতিক পরিবর্তন মধ্যপ্রাচ্যে নতুন আলোচনার সূত্রপাত করেছে। দেশটির ভবিষ্যৎ কী দিকে মোড় নেয়, তা এখন সবার চোখে।
সিরিয়ায় শরিয়াহ আইন চালুর ঘোষণা মুসলিম বিশ্বে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কিছু মুসলিম দেশ এই সিদ্ধান্তকে ইসলামী মূল্যবোধের পুনরুজ্জীবন হিসেবে দেখছে এবং সমর্থন জানাচ্ছে। অন্যদিকে, কিছু দেশ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও আঞ্চলিক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে সুন্নি ও শিয়া নেতৃত্বাধীন দেশগুলোর মধ্যে ভিন্ন মতামত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই পরিবর্তন মধ্যপ্রাচ্যে নতুন জোট ও সম্পর্কের গতিপথ নির্ধারণে ভূমিকা রাখতে পারে।
আলোকিত গৌড়/এম.আর
মন্তব্য করুন: