রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে ৩০ দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছেন। গত সপ্তাহে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা শেষে যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয়।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট পুতিন জানান, তিনি এই প্রস্তাবকে সমর্থন করেন। তবে তিনি এও উল্লেখ করেন যে, যেকোনো যুদ্ধবিরতি অবশ্যই দ্বন্দ্বের মূল কারণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হতে হবে এবং এর বিস্তারিত বিষয়ে আরও তথ্য প্রয়োজন।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক হামলা চালানোর নির্দেশ দেন। এরপর থেকে প্রায় তিন বছর ধরে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। এই যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় এবং একটি স্নায়ুযুদ্ধের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই সংঘাতের ফলে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়ে।
এর আগে রাশিয়া এই অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যানের ইঙ্গিত দিয়েছিল। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শীর্ষ পররাষ্ট্র নীতি কর্মকর্তা ইউরি উসাকোভ জানিয়েছিলেন যে, ৩০ দিনের এই অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ইউক্রেনের সেনাদের যুদ্ধক্ষেত্রে স্বস্তি দেবে। এতে ইউক্রেনীয় সেনারা লাভবান হবে, কারণ তারা এই সময়ে তাদের অবস্থান শক্তিশালী করতে পারবে। এই কারণে রাশিয়া এই অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে আগ্রহী ছিল না। তবে পরবর্তীতে পুতিন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সমর্থন জানালেও তিনি জোর দিয়েছিলেন যে, যেকোনো যুদ্ধবিরতি অবশ্যই দ্বন্দ্বের মূল কারণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হতে হবে এবং এর বিস্তারিত বিষয়ে আরও তথ্য প্রয়োজন।
তিনি দেশটির রাষ্ট্রয়াত্ত্ব সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “আমি বলেছি এই যুদ্ধবিরতি আর কিছু নয়, এটি ইউক্রেনীয় সেনাদের জন্য একটি বিরাম বা অবকাশ। আমাদের লক্ষ্য হলো দীর্ঘমেয়াদি শান্তি চুক্তি। যেটি আমাদের দেশের বৈধ স্বার্থগুলোকে দেখবে। আমার কাছে মনে হচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে ভুয়া শান্তি কার্যক্রমের কোনো প্রয়োজন কারও আছে।”
অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আপনারা প্রত্যাখ্যান করছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট পুতিন এ ব্যাপারে রাশিয়ার অবস্থান বিস্তারিত জানাবেন। পরবর্তীতে পুতিন সংবাদ সম্মেলনে জানান, তিনি এই যুদ্ধবিরতিতে রাজি।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাবে রাজি। কিন্তু আমরা এমনভাবে আগাব যেন এই বিরতি একটি দীর্ঘকালীন শান্তিতে পরিণত হয় এবং এটি এই দ্বন্দ্বের আসল কারণকে নিঃশেষ করবে।”
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও এ ব্যাপারে বিস্তারিত কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন পুতিন।
আলোকিত গৌড়/এম.আর
মন্তব্য করুন: