কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি, বানিজ্যিক চ্যালেঞ্জের মুখে দেশ

কানাডার রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। মার্ক কার্নি শুক্রবার (১৪ মার্চ) আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির ২৪তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে জাস্টিন ট্রুডোর নেতৃত্বাধীন সময়কাল।

গত ১০ মার্চ লিবারেল পার্টির দলীয় প্রধান নির্বাচিত হওয়ার পর সংবিধান অনুযায়ী তিনি প্রধানমন্ত্রিত্বের দায়িত্ব পান। আজ তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সেই দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। 

মার্ক কার্নির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার এই সময়টি কানাডার জন্য চ্যালেঞ্জিং। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির বাণিজ্যিক উত্তেজনা তীব্র হয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পরই কার্নি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক নিয়ে স্পষ্ট ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানান। কানাডিয়ান পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ২৫ শতাংশ শুল্ককে তিনি ‘কানাডার জন্য একটি বড় সংকট’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা এই বাণিজ্যিক দ্বন্দ্ব চাইনি। কিন্তু কানাডিয়ানরা সবসময় প্রস্তুত থাকে যখন কেউ তাদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। মার্কিনিদের উচিত হবে না কোনো ভুল করা। হকি খেলার মতো বাণিজ্যিক লড়াইয়েও কানাডা জিতবে।” 

এর আগে, ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য বলে কটাক্ষ করেন। এছাড়া, জাস্টিন ট্রুডোকে তিনি ‘গভর্নর ট্রুডো’ বলে সম্বোধন করেন। ট্রাম্পের এই মন্তব্যের জবাবে মার্ক কার্নি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, “আমেরিকা কানাডা নয়। আর কানাডা কখনোই আমেরিকার অংশ হবে না।” 

এদিকে, সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি এপ্রিলের শেষ দিকে কানাডায় নতুন সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দিতে পারেন। 

জাস্টিন ট্রুডো গত ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রিত্ব ও দলীয় নেতৃত্বের পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন। ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রুডো বেশ কিছু সংস্কার ও উদ্যোগ নেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তার জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ায় তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। আজ ছিল তার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেষ দিন। 

মার্ক কার্নির নেতৃত্বে কানাডা এখন নতুন এক যুগে প্রবেশ করছে। দেশটির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক কীভাবে এগোবে, তা এখন সকলের কৌতূহলের বিষয়।