মঙ্গলবার রাত থেকে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ব্যাপক বিমান হামলা চালায়, যাতে এখন পর্যন্ত ২০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। এছাড়া, সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলেও ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, সিরিয়ার সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে এই হামলা পরিচালিত হয়েছে।
গাজায় হামলার লক্ষ্য সম্পর্কে ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তারা বলেছেন, হামাসের মাঝারি পর্যায়ের কমান্ডার, নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তি এবং তাদের অবকাঠামোকে টার্গেট করা হয়েছে। তারা সতর্ক করে দিয়েছেন যে এই অভিযান কেবল বিমান হামলায় সীমাবদ্ধ থাকবে না এবং প্রয়োজন অনুযায়ী দীর্ঘায়িত হতে পারে। ইসরায়েলের সেনাপ্রধান এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেটের প্রধান এই হামলার সার্বিক তদারকি করছেন।
এই হামলার পেছনে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত মতভেদকে দায়ী করা হচ্ছে। গত ১৯ জানুয়ারি থেকে একটি তিনপর্যায়ের যুদ্ধবিরতি কার্যকর ছিল, যার অধীনে বন্দি বিনিময় ও গাজায় খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহ স্বাভাবিক করার শর্ত ছিল। তবে ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রবেশের কথা থাকলেও, গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারে ইসরায়েলের অনিচ্ছার কারণে অচলাবস্থা তৈরি হয়। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার রাত থেকে ইসরায়েল নতুন করে বিমান হামলা শুরু করে।
সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলেও সোমবার রাতে ইসরায়েলি বিমান হামলা চালানো হয়। আইডিএফের বিবৃতি অনুযায়ী, দক্ষিণ সিরিয়ায় অবস্থিত সামরিক স্থাপনা ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করায় সেগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। তবে সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় দারা শহরে ২ জন নিহত এবং ১৯ জন আহত হয়েছেন, যাদের সবাই বেসামরিক নাগরিক।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, ইসরায়েলের দাবি সত্ত্বেও হামলার লক্ষ্যবস্তুগুলো সিরিয়ার বর্তমান সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাই এই হামলাকে সিরিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
গাজায় হামলায় ব্যাপক প্রাণহানি এবং সিরিয়ায় হামলার ফলে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করলেও, এখন পর্যন্ত কোনো বড় ধরনের কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ দেখা যায়নি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান বজায় রাখলেও এই সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
সূত্র: সিএনএন, আলজাজিরা, সানা, সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস
আলোকিত গৌড়/এম.আর
মন্তব্য করুন: