বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের কেন ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মো: কামরুল হোসেন মোল্লা ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি গ্রহণ করে এ রুল জারি করেন।
একইসাথে ঐতিহাসিক এই আন্দোলনে গত ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আহত ও গ্রেফতারদের কেন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ঘোষণা করা হবে না এবং ৭১-এর মুক্তিযোদ্ধাদের মতো এদের কেন আর্থিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে পুনর্বাসন করা হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সাথে ছিলেন আইনজীবী মো: রায়হান আলম ও মো: মাকসুদ উল্লাহ।
আইনজীবী রায়হান আলম বলেন, যারা গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যবরণ করেছেন, যাদের পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে এবং যাদেরকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে, এই মানুষগুলোর অবদানের পেছনে আজকে আমরা দাঁড়িয়ে আছি একটা ফ্যাসিস্টমুক্ত অবস্থানে। একই সাথে যারা আহত হয়েছেন, যাদের এক চোখ বা দুই চোখ নেই। যাদের এক পা বা দুই পা নেই। এভাবে যারা আহত হয়েছেন, তাদের কেন মুক্তিযোদ্ধা ঘোষণা করা হবে না, সে মর্মে আমি রুল জারির আবেদন করি। আদালত দীর্ঘ শুনানির পর আবেদন মঞ্জুর করে রুল জারি করেছেন।
স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট করেন চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী নাজির শাহীন।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৪২৩ জন নিহত হয়েছেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য সচিব ও সমন্বয়ক তারেকুল ইসলাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তারেকুল ইসলাম জানান, আমরা ১ হাজার ৪২৩ জন শহিদের একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি করতে পেরেছি। তবে এর মধ্যে সংযোজন-বিয়োজন হবে।
তিনি আরো বলেন, আন্দোলনকে ঘিরে ২২ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫৮৭ জনের অঙ্গহানি হয়েছে। গুলি লেগে আংশিক বা সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন ৬৮৫ জন। ৯২ জনের দুই চোখেই গুলি লেগেছে, দুই চোখই নষ্ট হয়ে গেছে।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: