বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়া বিদেশিদের মধ্যে চীন ও আফ্রিকার নাগরিক বেশি। নারী নির্যাতন, প্রতারণা, অনলাইন জুয়া, মানব ও অর্থ পাচার, মারামারির মতো মামলায় জড়িয়ে পড়ছেন তারা।
বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়া বিদেশিদের মধ্যে চীন ও আফ্রিকার নাগরিক বেশি। নারী নির্যাতন, প্রতারণা, অনলাইন জুয়া, মানব ও অর্থ পাচার, মারামারির মতো মামলায় জড়িয়ে পড়ছেন তারা।
গ্রেপ্তারও করা হয় অনেককে, তবে জামিনে বেরিয়ে নিজের দেশে ফিরে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে বিচার প্রক্রিয়া। তাই দ্রুত বিচারের জন্য, বিদেশি অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা হলে তদন্ত পর্যায়ে পাসপোর্ট জব্দ করার তাগিদ বিশ্লেষকদের।
অনলাইনে কাজের মাধ্যমে আয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিদেশে পাচার-এই অভিযোগে, গেলো বছরের আগস্টে ২ চীনা নাগরিকসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল গোয়েন্দা পুলিশ। এ ধরনের চক্রের ফাঁদে পড়ে ৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা খুইয়েছেন একজন অতিরিক্ত সচিব।
এদিকে, জানুয়ারিতে রাজধানীর উত্তরার একটি আবাসিক হোটেলে পুলিশের ডগ স্কোয়াড এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে ২০০ গ্রাম কোকেনসহ গ্রেপ্তার করা হয় তানজানিয়ার এক নাগরিককে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ জানিয়েছে, ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত নারী নির্যাতন, প্রতারণা, মাদক ও অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধে বাংলাদেশে অবস্থানকারী বিদেশিদের বিরুদ্ধে অন্তত ৫০টি মামলা হয়েছে। যাতে আসামি অন্তত ৯০ জন। তবে বেশির ভাগই জামিনে বেরিয়ে দেশে ফিরে গেছেন। এসব মামলায় দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি অপরাধে জড়িত চীন ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের নাগরিকেরা।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘অনেকে হয়তো চাকরি করছে, অনেকে হয়তো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আছেন। স্বাভাবিক কারণে এখানকার মানুষের সঙ্গে অর্থনৈতিক লেনদেন হয়। সবচেয়ে ভালো হয় প্রাথমিকভাবেই কাউকে সন্দেহ হলে তাদের ব্যাপারে চলাচল সীমিত করায় বাঞ্ছনীয়।
অপরাধ বিশ্লেষকেরা বলছেন, তদন্তের সময় বিদেশিরা জামিনে বের হয়ে দেশে ফিরে যাওয়ায় বিচার প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হয়। এতে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হন ভুক্তভোগীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাজমুস সাকিব বলেন, ‘পাসপোর্ট সেটা যদি জব্দ করা না হয় তাহলে তদন্ত করার সময় তারা পাসপোর্ট বা কাগজপত্র দিয়ে নিজ দেশে চলে যেতে পারেন। তাহলে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তাদেরকে আইনের আওতায় আনার ক্ষেত্রে আসলে কিছুই করার থাকে না। সেই কারণে তদন্ত করার সময় তাদের পাসপোর্ট বা বৈধ কাগজপত্র জব্দ করে নেওয়া উচিত।’
এদিকে, ভাষাসহ বিভিন্ন কারণে বিদেশি আসামিদের মামলা তদন্তে সমস্যায় পড়তে হয় সংশিষ্টদের। এজন্য প্রশিক্ষিত তদন্তদল গঠনের পরামর্শ বিশ্লেষকদের।
আলোকিত গৌড়/এফ.এ
মন্তব্য করুন: