[email protected] বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
৩ বৈশাখ ১৪৩২

লাইলাতুল কদর: হাজার মাসের চেয়ে মর্যাদাবান রাত

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২৫, ১০:২৬

ফাইল ছবি

প্রতিবছর একটি রাত আসে, যা মহান আল্লাহ তাআলা অন্য সব রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। সেই বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন রাতের নাম ‘লাইলাতুল কদর’ বা শবেকদর। এই মহিমান্বিত রাতে পবিত্র কোরআন নাজিল করা হয় এবং একে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম ঘোষণা করা হয়েছে।

লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন অবতীর্ণ করেছি মহিমান্বিত রাতে। আর মহিমান্বিত রাত সম্পর্কে তুমি কী জানো? মহিমান্বিত রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।’
(সুরা : কদর, আয়াত : ১-৩)

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘রমজান মাস, যাতে কোরআন নাজিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলি ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে।’(সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৫)

হাদিসের আলোকে লাইলাতুল কদরের ফজিলত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কাছে এ মাস সমুপস্থিত। এতে রয়েছে এমন এক রাত, যা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। এ থেকে যে ব্যক্তি বঞ্চিত হলো, সে সমস্ত কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হলো।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬৪৪)

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আশায় লাইলাতুল কদর-এ ইবাদত করবে, তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৫)

লাইলাতুল কদর নির্ধারণের আলামত ও তারিখ
১. রমজানের শেষ দশক
নবীজি (সা.) রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন এবং সাহাবাদেরও লাইলাতুল কদর খোঁজার নির্দেশ দিতেন।

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত,‘তোমরা রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করো।’ (বুখারি, হাদিস : ২০২০)

২. বিজোড় রাতগুলোতে অনুসন্ধান
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা তা শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে তালাশ করো।’ (বুখারি, হাদিস : ২০২৭) বিশেষভাবে ২৫, ২৭ ও ২৯তম রাত অধিক সম্ভাবনাময়।

৩. আকাশ ও আবহাওয়ার পরিবর্তন
লাইলাতুল কদর-এর রাতে আবহাওয়া হবে শান্ত ও নির্মল। উবাদাহ ইবনে সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘সে রাতটি হবে পরিষ্কার ও উজ্জ্বল—না ঠান্ডা, না গরম।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২২৭৬৫) কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে, সে রাতে মৃদু বৃষ্টি হতে পারে।

৪. চাঁদের অবস্থা
সে রাতে চাঁদের আলো হবে থালার টুকরার মতো। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘চাঁদ উদিত হবে থালার একটি টুকরার মতো।’(মুসলিম, হাদিস : ২৬৬৯)

৫. সকালের সূর্যের অবস্থা
লাইলাতুল কদর-এর পরদিন সকালের সূর্য হবে উজ্জ্বল, কিন্তু কিরণবিহীন। উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, ‘সে রাতের পরে সূর্য উদিত হবে কিরণহীন।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৬৭০)

মুমিনের করণীয়
মহিমান্বিত রাতের ফজিলত অর্জনের জন্য আমাদের উচিত রমজানের শেষ দশকের প্রতি রাতে ইবাদতে মনোযোগী হওয়া। কোরআন তিলাওয়াত, নফল নামাজ, দোয়া ও ইস্তেগফার করা।

লাইলাতুল কদরে পড়ার জন্য নবীজি (সা.)-এর শেখানো দোয়া:

اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা'ফু আন্নি।
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমাকে ভালোবাসেন, আমাকে ক্ষমা করুন।

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে লাইলাতুল কদরের বরকত ও ক্ষমা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর