নফল ইবাদত কেমন হওয়া উচিত? এবিষয়ে হাভার্ড ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ও ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মির্জা গালিব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট করেন।
সেখানে তিনি নফল ইবাদতের ব্যাপারে সমাজে প্রচলিত ধারণার চেয়ে ভিন্ন বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেছেন। তাই তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে প্রোফাইলে শেয়ার করা বিশ্লেষণের সম্পূর্ণ পোস্টটি আলোকিত গৌড়ের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
“মুসলমান হিসাবে আমাদের যা যা করতে হয় তার কিছু কাজ ফরয আর কিছু কাজ নফল । ফরয মানে অবশ্যই করতে হবে, যেমন দিনে পাঁচ বার নামায পড়া । আর নফল মানে ফরযের অতিরিক্ত । যেমন রাতের বেলায় তাহাজ্জুদের নামায পড়া । সুন্নাত আর মুস্তাহাব দুই ই মূলত নফলের মধ্যে পরে ।
নফল কাজের ক্ষেত্রে আমরা সাধারনত মুয়ামেলাতের চাইতে ইবাদত কে অধিক গুরুত্ব দেই । মুয়ামেলাত মানে সামাজিক কাজ যেমন দান-সদকা করা, রোগীর সেবা করা, বাবা-মার সেবা করা , বন্ধু -বান্ধব -প্রতিবেশীর সাথে ভাল আচরণ করা, সৎ পথে আয় রোজগার করা ইত্যাদি । আর ইবাদত মানে আনুষ্ঠানিক ইবাদত বন্দেগী যেমন নফল নামাজ পড়া, কুরআন তেলাওয়াত করা, তাসবীহ-তাহলীল করা ইত্যাদি । অথচ, ইসলামে এই দুয়ের মর্যাদা এবং গুরুত্ব সমান ।
রাসুল (সা) এর জীবনে ইবাদত আর মুয়ামেলাতের ভারসাম্য ছিল। রাত জেগে নামায পড়তে পড়তে যেমন তাঁর পা ফুলে গেছে, আবার সারাক্ষণ রাসুল (সা) এর মুখে মুচকি হাসিও লেগে থাকত। কেউ এসে হ্যান্ডশেক করলে আগে থেকে কখনোই নিজের হাত সরিয়ে নিতেন না উনি। আরব বেদুইনদের অভব্য আচরণেও রাগ করতেন না ।
ইমাম বুখারী আল আদাব আল মুফরাদ বইতে একটা হাদিস বর্ননা করেছেন ।" যে ব্যক্তি বিধবা এবং গরীব মানুষের জন্য কাজ করে সে ওই ব্যক্তির সমান যে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ করে। ওই ব্যক্তিরও সমান যে দিনের বেলা নফল রোজা রাখে আর রাতের বেলা নফল নামায পড়ে । "
কাজেই, আমাদের তাকওয়া যেন মানুষের জন্য কাজ করার মধ্যেও থাকে, মজলুমের পক্ষে দাড়ায়ে সত্য বলার মধ্যেও থাকে, প্রতিবেশীর খোঁজখবর নেয়ার মধ্যেও থাকে। চোখের সামনে অন্যায় দেখলে যেন সাহসের সাথে তার প্রতিবাদ করি । ইবাদত করার আগে যেন ইনকাম হালাল ভাবে করি ।
নয়তো, সমাজে পাল্লা দিয়ে মসজিদের সংখ্যা বাড়ার সাথে ঘুষখোর এর সংখ্যাও বাড়তে থাকবে , নামাযী লোক বাড়ার সাথে সাথে ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স করার লোকও বাড়তে থাকবে ।”
আলোকিত গৌড়/জে.আর
মন্তব্য করুন: