[email protected] শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২৭ ভাদ্র ১৪৩২

‘কবুল’ বলা ছাড়াও যেসব শব্দে বিয়ে হয়ে যায়

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২:০৮

ফাইল ছবি

বিয়ে ইসলামে এক পবিত্র বন্ধন, যা নারী-পুরুষের মধ্যে বৈধ সম্পর্ক স্থাপন করে এবং গুনাহ থেকে বাঁচার সুযোগ তৈরি করে। এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি বিয়ে করল সে তার অর্ধেক দ্বীন পূর্ণ করল। অতএব বাকি অর্ধেকে সে যেন আল্লাহকে ভয় করে।” (বায়হাকি, শুআবুল ইমান)।

আরেক হাদিসে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) এরশাদ করেছেন, “হে যুবকরা! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিয়ে করে। কেননা বিয়ে দৃষ্টি নত করে ও লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। আর যে সামর্থ্য না রাখে, সে রোজা রাখুক, কারণ রোজা খাহেশ কমিয়ে দেয়।” (বুখারি, মুসলিম)।

নিকাহর শর্ত

হানাফি ফিকহ মতে, নিকাহ সম্পন্নের জন্য চারটি শর্ত আবশ্যক

১. ইজাব (প্রস্তাব)

২. কবুল (গ্রহণ)

৩. স্পষ্ট বাক্য (নিকাহ বোঝায় এমন শব্দ)

৪. সাক্ষী (দুজন পুরুষ অথবা এক পুরুষ ও দুই নারী)

শুধু ‘কবুল’ নয়, যেসব শব্দেও বিয়ে সহীহ

ফিকহি কিতাবসমূহে উল্লেখ আছে, সরাসরি “কবুল” না বলেও বিকল্প কিছু শব্দ ব্যবহারে বিয়ে সম্পন্ন হয়। যেমন

ক্ববিলতু (আমি গ্রহণ করলাম)

রদ্বিতু (আমি সন্তুষ্ট/রাজি হলাম)

তাজায়ায্জাত্তুহা (আমি তাকে বিবাহ করলাম)

আনকাহতু নাফসি ইయ్యাহু (আমি নিজেকে তার সাথে বিবাহ করলাম)

আজাযতুহু (আমি অনুমোদন করলাম)

কিতাব ও দলিল

ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: নিকাহ স্পষ্ট শব্দ দ্বারা জায়েয হয় أنكحتُ, تزوجتُ, قبلتُ, رضيتُ ইত্যাদি।

হেদায়া: ইজাব ও কবুল এমন শব্দে হতে হবে, যা স্পষ্টভাবে নিকাহ বোঝায়।

দররুল মুখতার: যে শব্দে তৎক্ষণাৎ নিকাহ বোঝা যায়, যেমন زوجتك، أنكحتك, تزوجت ইত্যাদি তা বৈধ।

 

কোরআনে বলা হয়েছেভদ্রভাবে স্ত্রীর সঙ্গে জীবন যাপন করো, কিংবা সম্মানের সঙ্গে বিদায় দাও।” (সূরা বাকারা ২:২২৯)। এখানে إِمْسَاكٌ শব্দে দাম্পত্য জীবনে সম্মতি ও স্বীকৃতির দিকটি স্পষ্ট।

রাসূল (সা.) বলেছেননিকাহ পরস্পরের সম্মতির ভিত্তিতে সম্পন্ন হয়।” (ইবনু মাজাহ)।

হানাফি ফিকহ অনুযায়ী, সরাসরি ‘আমি কবুল করলাম’ না বলেও যদি সম্মতির প্রকাশ স্পষ্ট হয় এবং প্রেক্ষাপট পরিষ্কার থাকে, তবে নিকাহ সহীহ। তবে সমাজে বিভ্রান্তি এড়াতে প্রচলিতভাবে ‘আমি কবুল করলাম’ বলা উত্তম।

আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর