বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহনশীলতা পৃথিবীর অন্যত্র বিরল দৃষ্টান্ত হলেও নানা সময়ে রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করে অস্থিরতা সৃষ্টির ঘটনা ঘটেছে। বিশ্লেষকদের মতে, ধর্মের নামে যত অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো প্রকৃতপক্ষে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই সংঘটিত হয়েছে।
কুরআনের শিক্ষা অনুযায়ী, অমুসলিমদের সঙ্গে স্বাভাবিক সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখা এবং তাদের প্রতি সদয় ও ন্যায়সঙ্গত আচরণ করা মুসলমানদের জন্য আবশ্যক। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন থেকেও মানুষ হিসেবে সব ধর্মের অনুসারীদের মর্যাদা দেওয়ার শিক্ষা পাওয়া যায়।
তবে ধর্মীয় সম্প্রীতির নামে নিজস্ব ধর্মচেতনায় উদাসীন হওয়ার বিপদও তুলে ধরা হয়। ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী, উদার হওয়া আবশ্যক হলেও উদাসীনতা কাম্য নয়। বিশেষত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পূজা অনুষ্ঠানকে ইসলাম সম্মান দেখালেও এতে মুসলমানদের অংশ নেওয়া শিরকের কারণে অনুমোদিত নয়।
ধর্মীয় বিশ্লেষকরা বলেন, পূজার প্রধান আনুষ্ঠানিকতা যেহেতু শিরকের সঙ্গে সম্পর্কিত, তাই মুসলমানরা সেখানে শরিক হতে পারে না। তবে হিন্দুদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় বাধা দেওয়া বা পূজামণ্ডপে হামলা চালানো সম্পূর্ণ অন্যায় ও ইসলামবিরোধী কাজ।
তাদের মতে, রাজনৈতিক দল যেমন নিজের আদর্শ রক্ষায় সতর্ক থাকে, মুসলমানদেরও তেমনি স্বতন্ত্র ধর্মীয় চেতনা বজায় রাখতে হবে। এমনকি নবীজি (সা.) ইহুদিদের রোজার সঙ্গে সাদৃশ্য এড়াতে আশুরার সঙ্গে অতিরিক্ত রোজার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এতে বোঝা যায়, ইসলামে স্বাতন্ত্র্যবোধ কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
পাশাপাশি পূজার সময় কোথাও কোথাও মন্দির আক্রমণ ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটার সমালোচনা করে বলা হয়, এটি কোনোভাবেই জায়েজ নয়। ধর্মের প্রকৃত জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি এ ধরনের কাজ করতে পারে না। এজন্য প্রত্যেক এলাকার দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সজাগ থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে কেউ মন্দিরে হামলা করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে না পারে।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: