মানুষের জীবনে ঘর-বাড়ি মহান আল্লাহর এক বিশেষ অনুগ্রহ। ঘরের মাধ্যমে মানুষ নিরাপত্তা ও স্বস্তি লাভ করে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ তোমাদের ঘরকে করেছেন আবাসস্থল...” (সুরা নাহল, আয়াত : ৮০)।
ঘর আল্লাহর অনুগ্রহ
তাফসিরকার আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, ঘর মানুষের জন্য আশ্রয়, গোপনীয়তা রক্ষা এবং বহুবিধ উপকারের মাধ্যম। নবীজি (সা.) বলেছেন, “কোনো ব্যক্তির সৌভাগ্যের নিদর্শন হলো—নেককার স্ত্রী, প্রশস্ত বাসস্থান, উত্তম প্রতিবেশী ও আরামদায়ক বাহন।” (আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৪৫৭)।
মানবজীবনে ঘরের গুরুত্ব
ঘর মানুষের নিরাপদ আশ্রয়। নবীজি (সা.) প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেন। তিনি বলতেন—“প্রশংসা সেই রবের যিনি আমাদের খাওয়ালেন, পান করালেন এবং ঘরে আশ্রয় দিলেন, অথচ অনেক মানুষ এসব থেকে বঞ্চিত।” (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৫৩)।
যেমন হবে মুমিনের ঘর-বাড়ি
ইসলামের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী আদর্শ ঘর হবে—
প্রশস্ত কিন্তু অপচয়হীন।
স্বাস্থ্যকর ও আলো-বাতাসসমৃদ্ধ।
কর্মস্থলের অনুকূল।
টয়লেট উত্তর বা দক্ষিণমুখী।
নিরাপত্তার ব্যবস্থা সম্পন্ন। নবীজি (সা.) রাতে আগুন নিভিয়ে ঘুমাতে এবং দরজা বন্ধ রাখতে বলেছেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৩০৪)।
গৃহসজ্জায় ইসলামের শিক্ষা
সাধারণ সৌন্দর্য বৈধ, তবে অপচয় নিষিদ্ধ।
প্রাণীর ছবি ও ভাস্কর্য ব্যবহার করা যাবে না।
অহংকার প্রকাশ পায় এমন উপকরণ বর্জনীয়।
ঘরের প্রকৃত সৌন্দর্য ইবাদত, জিকির ও তিলাওয়াত। নবীজি (সা.) বলেছেন, “যে ঘরে আল্লাহর জিকির হয় না, তা কবরে পরিণত হয়।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭৭৯)।
নবীজির (সা.) ঘর
নবীজি (সা.) সহজ-সরল জীবনে সন্তুষ্ট থাকতেন। তাঁর ঘর ছিল খেজুর গাছের ডাল ও মাটির দেয়াল দিয়ে নির্মিত, যা ছিল প্রয়োজনীয়তার বাইরে কিছু নয়।
মহান আল্লাহ যেন সবাইকে উত্তম ও বরকতময় বাসস্থান দান করেন—আমিন।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: