[email protected] সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
২৮ আশ্বিন ১৪৩২

কোরআন তিলাওয়াতকারীর বিশেষ ১০ মর্যাদা

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:১৮

ফাইল ছবি

কোরআন তিলাওয়াত মুমিনের অন্তরে এমন আলোড়ন সৃষ্টি করে, যা তার বাহ্যিক আচরণেও প্রতিফলিত হয়। মহান আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন উত্তম বাণী সংবলিত কিতাব, যা সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং পুনঃপুনঃ আবৃত্তি করা হয়। এতে যারা তাদের প্রতিপালককে ভয় করে, তাদের দেহ রোমাঞ্চিত হয়, অতঃপর তাদের দেহমন বিনম্র হয়ে আল্লাহর স্মরণে ঝুঁকে পড়ে।” (সুরা : ঝুমার, আয়াত : ২৩)

নিম্নে কোরআন তিলাওয়াতকারীর বিশেষ ১০টি মর্যাদা তুলে ধরা হলো—

১. সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “তোমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ সেই ব্যক্তি, যে নিজে কোরআন শিখে এবং অন্যকে শেখায়।” (বুখারি, হাদিস : ৫০২৭)

২. কোরআন তিলাওয়াতকারী মুমিন মর্যাদায় শ্রেষ্ঠতম

তিনি বলেন, “যে মুমিন কোরআন তিলাওয়াত করে, সে উত্রুজ্জা ফলের মতো—যার ঘ্রাণ ও স্বাদ দুটোই উত্তম। আর যে মুমিন কোরআন তিলাওয়াত করে না, সে খেজুরের ন্যায়—যার ঘ্রাণ নেই, কিন্তু স্বাদ ভালো।” (বুখারি, হাদিস : ৫৪২৭)

৩. দুনিয়াবি মর্যাদা বৃদ্ধি

উমর (রা.) বলেন, “এই কিতাবের অনুসরণের মাধ্যমে আল্লাহ অনেক জাতিকে মর্যাদায় উন্নীত করেন এবং কোরআন পরিত্যাগকারীদের অবনত করেন।” (ইবনু মাজাহ, হাদিস : ২১৮)

৪. আসমান ও জমিনে উচ্চ সম্মান

রাসুল (সা.) বলেন, “কোরআন তিলাওয়াতকে তুমি আবশ্যক করে নাও। এটি তোমার জন্য জমিনে আলোকবর্তিকা ও আসমানে ধনভাণ্ডারস্বরূপ।” (সহিহ ইবনু হিব্বান, হাদিস : ৩৬১)

৫. গাফেলদের তালিকা থেকে মুক্তি

রাসুল (সা.) বলেন, “যে ব্যক্তি রাতে ১০০ আয়াত তিলাওয়াত করবে, সে গাফেলদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে না।” (সহিহ ইবনু খুজায়মাহ, হাদিস : ১১৪২)

৬. তিলাওয়াতকারীর পাপ নেকিতে পরিবর্তিত হয়

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “যখন কোনো জনসমষ্টি আল্লাহকে স্মরণের উদ্দেশ্যে একত্র হয়, তখন তাদের বলা হয়—তোমরা পাপ থেকে ক্ষমাকৃত অবস্থায় দণ্ডায়মান হও। কেননা তোমাদের পাপকে পুণ্য দিয়ে পরিবর্তন করা হয়েছে।” (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ১২৪৭৬)

৭. ঈমানি জ্যোতির বিকিরণ

রাসুল (সা.) বলেন, “যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ তিলাওয়াত করে, তার ঈমানি জ্যোতির বিকিরণ থাকবে এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত।” (মুসতাদরাক হাকেম, হাদিস : ৩৩৯২)

৮. কোরআনের ধারক জাহান্নামে যাবে না

রাসুল (সা.) বলেন, “তোমরা কোরআন পাঠ করো। আল্লাহ সেই অন্তরকে কখনো শাস্তি দেবেন না, যা কোরআনের সংরক্ষক।” (দারেমি, হাদিস : ৩৩১৯)

৯. সম্মানিত ফেরেশতাদের মর্যাদা লাভ

রাসুল (সা.) বলেন, “কোরআনে দক্ষ ব্যক্তি সম্মানিত পুণ্যবান লিপিকার ফেরেশতাদের সঙ্গে থাকবেন। আর যে ব্যক্তি কষ্টসহকারে তিলাওয়াত করে, তার জন্য দ্বিগুণ নেকি রয়েছে।” (বুখারি, হাদিস : ৪৯৩৭)

১০. জান্নাতে সর্বোচ্চ মর্যাদা লাভ

রাসুল (সা.) বলেন, “কোরআন অধ্যয়নকারীকে বলা হবে—তিলাওয়াত করো ও ওপরে উঠতে থাকো। কেননা তিলাওয়াতের শেষ আয়াত সংখ্যায় জান্নাতে তোমার বাসস্থান হবে।” (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৬৪; তিরমিজি, হাদিস : ২৯১৪)কোরআন তিলাওয়াত শুধু মুখের উচ্চারণ নয়, বরং এটি হৃদয়ের প্রশান্তি, ঈমানের দৃঢ়তা এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম। তাই প্রতিটি মুমিনের উচিত নিয়মিত কোরআন পাঠ, অনুধাবন ও তা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা।

আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর