[email protected] বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
৩ বৈশাখ ১৪৩২

সবসময় গর্বের সাথে দেশকে নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেছি এবং ভবিষ্যতে অন্যান্য ফরম্যাটেও সেটা করে যাব

টি-২০ ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন আরো এক ভারতীয় অলরাউন্ডার

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১ জুলাই ২০২৪, ০৪:০৮

বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে নিয়ে হাসিমুখে টি–টোয়েন্টিকে বিদায় বললেন রবীন্দ্র জাদেজা-সংগৃহিত ছবি

২০০৯ সালে আন্তর্জাতিক টি-২০তে অভিষেক হয় তার। এই ফরম্যাটে ৭৪ ম্যাচে ৫১৫ রান এবং ৫৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ইনস্টাগ্রামে তিনি লিখেছেন, কৃতজ্ঞতাপূর্ণ হৃদয় নিয়ে আমি টি-২০ ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছি।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফাইনালে শেষ বলটা হওয়ার পর উইকেটের মাঝের দিকটায় বসে পড়লেন হার্দিক পান্ডিয়া। ৩০ গজের ভেতরে ফিল্ডিং করতে থাকা রোহিত শর্মা খুশিতে আত্মহারা হয়ে লুটিয়ে পড়লেন মাঠেই। বাকিদের অবস্থাও প্রায় একই। কেউ এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করছেন তো কেউ কেঁদে চোখ ভাসিয়ে দিচ্ছেন। এই ছবিগুলো ১৭ বছর পর টি-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জেতার আনন্দের।


বিরাট কোহলি টি-২০ বিশ্বকাপের স্কোয়াডে থাকবেন কি না তা নিয়ে ছিল সন্দেহো। যদিও বা শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারের বিশ্বকাপ খেলতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ধরেছিলেন। কোহলি পুরো টুর্নামেন্ট খেললেন ওপেনার হিসেবে। নতুন জায়গায় থিতু হতে পারলেন না, ফাইনালের আগে সব ম্যাচ মিলিয়ে করলেন মোটে ৭৫ রান। মুখ ফুটে কেউ না বললেও অনেকের মনে হয়তো তখন এমন প্রশ্ন জেগে উঠেছিলো কোহলি টি-২০ ছাড়বেন কবে।

এমন পরিস্থিতিতে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ফাইনালের আগে রোহিত শর্মা জানালেন, কোহলি হয়তো সবটা ফাইনালের জন্য জমা রেখেছেন। একই সুরে কথা বলেছেন প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড়ও। শেষ পর্যন্ত তাদের দু’জনের কথাই সত্যি হয়েছে।

ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে নিয়ে কোহলি বলেন, ‘এটা আমার শেষ টি-২০ বিশ্বকাপ এবং এটি আমরা অর্জন করতে চেয়েছি। ঈশ্বর মহান এবং যে দিন গুরুত্বপূর্ণ, আমি দলের কাজটি করেছি।

ভারতের হয়ে আমার শেষ টি-২০ সবটুকু কাজে লাগাতে চেয়েছি।’
২০১০ সালের জুনে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-২০ ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল কোহলির। ১৪ বছরের টি-২০ ক্যারিয়ারে ভারতের হয়ে ১২৫ ম্যাচ খেলেছেন। ৪৮.৬৮ গড় ও ১৩৭.০৪ স্ট্রাইক রেটে ৪ হাজার ১৮৮ রান করেছেন। একটা সেঞ্চুরির সাথে ৩৮টা হাফ সেঞ্চুরি আছে কোহলির। আন্তর্জাতিক টি-২০ ছাড়লেও আইপিএলে খেলবেন তিনি।

এ দিকে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে ট্রফি উঁচিয়ে ধরলেন রোহিত। ২০০৭ সালেও একই শিরোপা জিতেছিলেন তিনি। তবে রোহিতের কাছে এবারের বিশ্বকাপটা একটু আলাদা। অধিনায়ক হিসেবে আইসিসির সবশেষ দুই টুর্নামেন্টে হারার পর অবশেষে ট্রফি উঁচিয়ে ধরলেন। শিরোপা হাতে নিয়ে সমর্থকদের কাছে গেলেন, তাদের সাথে আনন্দটা ভাগাভাগিও করলেন।

রোহিত সংবাদ সম্মেলনে এলেন একটু দেরিতে। এতদিন পর শিরোপা জেতার অনুভূতি, দলের পারফরম্যান্সের সাথে ভিন্ন ভিন্ন ক্রিকেটারকে নিয়ে আলাদা আলাদা উত্তর দিলেন। শেষ দিকে এসে বিরাট কোহলির মতোই অনেকটা চমকে দিয়েছেন। ভারতের অধিনায়কও বলে গেলেন জাতীয় দলের হয়ে এটাই তার শেষ টি-২০ ম্যাচ।

সংবাদ সম্মেলনে নিজের অবসর নিয়ে রোহিত বলেন, ‘এটাই আমার শেষ আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচ ছিল। এই সংস্করণকে বিদায় বলার জন্য এটার চেয়ে ভালো সময় হতে পারে না। প্রতিটা মুহূর্তই আমি উপভোগ করেছি। এই সংস্করণ দিয়েই ভারতের হয়ে আমি আমার খেলোয়াড়ি জীবন শুরু করেছিলাম। এটা এমন কিছু যা আমি চাইতাম।’

২০০৭ সালে ডারবানে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-২০তে অভিষেক হয়েছিল রোহিতের। এরপর ১৭ বছরে খেলেছেন ৯টি টি-২০ বিশ্বকাপ। সব মিলিয়ে ভারতের জার্সিতে ১৫৯ ম্যাচে করেছেন ৪ হাজার ২৩১ রান। আন্তর্জাতিক টি-২০তে তার চেয়ে বেশি রান নেই আর কারো। ৩২.০৫ গড় ও ১৪০.৮৯ স্ট্রাইক রেটে রান করা রোহিত ৫ সেঞ্চুরির সাথে করেছেন ৩২ হাফ সেঞ্চুরি।

টি-২০ ফরম্যাটকে বিদায় বললেন ভারতীয় অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজাও। গতকাল নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ২০০৯ সালে আন্তর্জাতিক টি-২০তে অভিষেক হয় তার। এই ফরম্যাটে ৭৪ ম্যাচে ৫১৫ রান এবং ৫৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি।

ইনস্টাগ্রামে তিনি লিখেছেন, কৃতজ্ঞতাপূর্ণ হৃদয় নিয়ে আমি টি-২০ ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছি।

সবসময় গর্বের সাথে দেশকে নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেছি এবং ভবিষ্যতে অন্যান্য ফরম্যাটেও সেটা করে যাবো। টি-২০ বিশ্বকাপ জয় স্বপ্নসম। এটি আমার টি-২০ ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ চূড়ার মতো। অনেক অনেক স্মৃতি এবং নিঃস্বার্থ সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ।

আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর