চাঁপাইনবাবগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এজাবুল হক বুলি গত ১০ মাস ধরে পলাতক ছিলেন। তিনি ছাত্রশিবির নেতা তুহিন হত্যা মামলার আসামি হিসেবে অভিযুক্ত।
গত ৫ আগস্ট থেকে তিনি কলেজে অনুপস্থিত থাকলেও অভিযোগ রয়েছে, তিনি নিয়মিত বেতন গ্রহণ করছিলেন। তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষক-কর্মচারীরা তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের দাবি জানান।
গত বুধবার এবং আজ (২৫ ও ২৬ জুন) হঠাৎ করে কলেজে উপস্থিত হন এজাবুল হক বুলি। তার এই উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে কলেজে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ সময় কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরা সদস্য ও সাবেক এমপি লতিফুর রহমান কলেজে এসে শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি এজাবুল হক বুলিকে অধ্যক্ষ পদে বহাল রাখার চেষ্টা করছেন। বৈঠকের সময় কয়েকজন শিক্ষকের প্রতিবাদের মুখে লতিফুর রহমান তাদের ধমক দেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্টের পর এজাবুল হক বুলি আত্মগোপনে চলে যান। এ সময় তার বিরুদ্ধে ছাত্রশিবির নেতা তুহিন হত্যা মামলা দায়ের হয়। চলতি বছরের ১০ মার্চ আদালতে জামিন চাইলে তা নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
লতিফুর রহমান শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করে পরীক্ষা কমিটি গঠনের কথা বলেন। তবে শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, লতিফুর রহমান আসলে এজাবুল হক বুলিকে অধ্যক্ষ পদে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে সূরার সদস্য অধ্যাপক লতিফুর রহমান বলেন, কলেজটি দীর্ঘ দিন অভিভাবক শূণ্য অবস্থায় রয়েছে। তাই কলেজটি সঠিক ভাবে পরিচালনার জন্য শিক্ষকদের ডাকে আমি গিয়েছিলাম। এর আগেও শিক্ষকদের ডাকে দুইবার গিয়েছিলাম। এজাবুল হক বুলি বর্তমানে এখন সরকারি কর্মকর্তা। সে আগেও বিএনপি ও আওয়ামী লীগ করলেও বর্তমানে কোন রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে কোন মামলা বা অভিযোগ থাকলে সেটা প্রশাসন ব্যাবস্থা নিবে।
আওয়ামী লীগ নেতা স্বপদে রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি মূলত চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা হিসেবে কলেজটি রক্ষার স্বার্থেই গিয়েছি এবং এজাবুল হক বুলিকে স্বপদে রাখা বা পুর্নবাসন করা অথবা জামায়াতের রাজনীতিতে নেওয়ার কোন পরিকল্পনা নাই।
এজাবুল হক বুলি নিজে বিষয়টি নাকচ করে বলেন, লতিফুর রহমান সাহেব আমার জন্য আসেননি, তিনি কলেজের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এসেছিলেন। আমি দীর্ঘদিন ধরে মামলা ও মবিংয়ের শিকার হওয়ায় কলেজে আসতে পারিনি। ২০১৮ সালের পর আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত নেই।
কলেজ কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি। তবে শিক্ষক ও কর্মচারীদের একাংশের দাবি, এজাবুল হক বুলির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
আলোকিত গৌড়/এম.আর
মন্তব্য করুন: