সোমবার (১০ মার্চ) নেত্রকোণার খালিয়াজুরীতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনার দুই দিন পর ধনু নদী থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দুপুরে স্থানীয়দের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস ধনু নদীর নাওটানা এলাকা সংলগ্ন আশালিয়া ঘাট থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করে।
নিহতরা হলেন- আটপাড়া উপজেলার রূপচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত রুস্তম আলীর ছেলে শহিদ মিয়া (৫০), মদন উপজেলার বাগজান গ্রামের রুকন মিয়া (৪৫) ও কেন্দুয়া উপজেরার রোয়াইলবাড়ি গ্রামের হৃদয় মিয়া (১৯)। এছাড়া ইয়াসিন মিয়া নামে আরও একজন নিখোঁজ রয়েছেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (৮ মার্চ) সকালে পলো বাইচের লোকজন রসুলপুর ঘাট এলাকায় ইজারাকৃত বিলে মাছ ধরতে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এ সংঘর্ষে দুই গ্রুপের প্রায় ৫০ জন মানুষ আহত হন। এ ছাড়াও শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং কয়েকটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় উত্তেজনা ও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ ঘটনার পর মদন উপজেলার রুকন মিয়া, ইয়াছিন মিয়া, আটপাড়ার শহিদ মিয়া এবং কেন্দুয়ার হৃদয় মিয়াসহ বেশ কয়েকজন নিখোঁজ হন।
ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের টিম লিডার নুরুল আলম খান জানান, তার নেতৃত্বে পাঁচজনের একটি ডুবুরি দল খালিয়াজুরী উপজেলার ধনু নদীতে দুপুর ১টার দিকে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। উদ্ধার কাজ শুরুর আধা ঘণ্টা পর শহিদ মিয়া নামে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। কিছুক্ষণ পর আবার উদ্ধার কাজ শুরু করলে হৃদয় মিয়া নামে আরেকজনের মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। এ ছাড়াও নৌ পুলিশের একটি দল লেপসিয়া বাজার এলাকায় ধনু নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় অপর আরেকটি মরদেহ উদ্ধার করে।
তিনি আরও জানান, আজকের মতো আমাদের উদ্ধার কাজ সমাপ্ত করে আমরা মদন উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে অবস্থান করছি। ইতোমধ্যে ময়মনসিংহ কন্ট্রোল রুম থেকে আমাদের জানানো হয়েছে যে আরেকটি মরদেহ নদীতে ডুবন্ত অবস্থায় থাকতে পারে। আমাদের কন্ট্রোল রুম থেকে যদি নির্দেশনা দেওয়া হয়, তাহলে আগামীকাল ফজরের পর থেকে আবার উদ্ধার কাজ শুরু করব।
নেত্রকোণার সহকারী পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠান বলেন, শনিবারের ঘটনার পর এলাকায় কিছু অস্থিরতা ছিল, তবে বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। গতকাল দুই গ্রুপের লোকজন মারামারি করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, কিন্তু প্রশাসনের হস্তক্ষেপের কারণে কোনো ধরনের ঝামেলা হয়নি। আজ আমি নিজেও ওই এলাকা পরিদর্শন করেছি এবং পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক রয়েছে। সংঘর্ষের পর রসুলপুরসহ ওই এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত রয়েছে। আজ ধনু নদী থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল।
আলোকিত গৌড়/এম.আর
মন্তব্য করুন: