বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় একটি বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এক নারী নিহত ও ৪৪ জন আহত হয়েছেন। ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সমন্বিত প্রচেষ্টায় প্রায় তিন ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
সোমবার (৭ এপ্রিল) সকালে উপজেলা সদরের ‘মাইশা টাওয়ার’ নামের পাঁচতলা ভবনে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। নিহত ব্যক্তি হলেন অনিতা রায় (৪৫), যিনি কাটাখালি এলাকার দেবুদাসের স্ত্রী। ফায়ার সার্ভিসের ধারণা, ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের সময় ভবনটিতে সোনালী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়াসহ চারটি ব্যাংকের শাখা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শোরুম ও একটি বেসরকারি ক্লিনিক চালু ছিল। নিচতলায় একটি মার্কেটও অবস্থিত।
স্থানীয় বাসিন্দা হালিম হোসেন জানান, হঠাৎ ধোঁয়া দেখা দেওয়ায় তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তখন ভবনের ভেতর থেকে মানুষের চিৎকার শোনা যায়। কেউ জানালা দিয়ে নিচে নামছিল, আবার কেউ সরাসরি লাফ দিচ্ছিল।
অন্য একজন বাসিন্দা রফিক মোল্লা বলেন, “সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস দ্রুত না এলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বড় হতো। আমরা স্থানীয়রা বালতি নিয়ে পানি ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছি।”
চিতলমারী সেনা ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন মো. রায়হান জানান, ঘটনার খবর পেয়ে সেনাসদস্যরা দ্রুত উদ্ধারকাজে অংশ নেয়। ভবনের চতুর্থ তলার একটি ক্লিনিক থেকে রোগীদের নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়।
খুলনা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক মো. মতিউর রহমান বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ভবনের নিচতলা থেকে আগুন লাগে, যা পরে তৃতীয় তলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। গোপালগঞ্জ, খুলনা ও বাগেরহাটের আটটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করে।” তিনি আরও জানান, আগুনের সঠিক কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি এখনও নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল আহসান ঘটনাস্থলে গিয়ে বলেন, “আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। ব্যাংকগুলো তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। নিহত ব্যক্তির মৃত্যু ধোঁয়ার কারণে হতে পারে। উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা সহযোগিতা করছে। ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।”
আলোকিত গৌড়/এম.আর
মন্তব্য করুন: