লেখক ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, “অবৈধ সরকারের অধীনে নির্বাচন অবৈধ।” বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বেলা ১১টা ৫৯ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিশ্লেষণধর্মী লেখায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “২০২৪ সালের অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পার হয়েছে। জনগণ ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও পুরোনো সংবিধান উৎখাত করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য রক্ত দিয়েছে। অথচ ২০২৫ সালে এসে ‘জুলাই ঘোষণাপত্রে’ পুরনো সংবিধান অক্ষুণ্ণ রেখে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হলো।”
ফরহাদ মজহারের মতে, “এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লুটেরা ও মাফিয়া গোষ্ঠীর হাতে পুনরায় ক্ষমতা তুলে দেওয়ার পথ তৈরি হচ্ছে। শেখ হাসিনার নিযুক্ত প্রেসিডেন্টকে রেখে এবং পুরনো সংবিধানের অধীনে সেনাসমর্থিত উপদেষ্টা সরকার গঠন করা হয়েছে—যা একটি সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব।”
তিনি আরও বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের যে গাঠনিক ক্ষমতা (Constituent Power) প্রকাশ পেয়েছে, তা উপেক্ষা করে গঠিত সরকারকে অন্তর্বর্তীকালীন বলা চলে না। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ। কাজেই এই সরকারের অধীনে ঘোষিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ এবং তার আওতায় আয়োজিত যেকোনো নির্বাচনও অবৈধ।”
তিনি অভিযোগ করেন, “এই সরকার আদতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে গঠিত একটি ‘ডুয়াল সরকার’। জেফরি স্যাকসের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন, এটি শুধু একটি ‘Regime Change’। এর পেছনে এস আলমসহ লুটেরা ও মাফিয়া শ্রেণির প্রভাব রয়েছে।”
ড. ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফরহাদ মজহার লেখেন, “আপনার সামনে এখন একটিই পথ—ফ্যাসিস্ট সংবিধান বাতিল করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন এবং গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন। এর বাইরে যেকোনো সমঝোতা ভবিষ্যতে আপনার জন্যই বিপদ ডেকে আনবে।”
শেষে তিনি বলেন, “আমাদের সমাজে রাষ্ট্র, সংবিধান, সরকার ও বিপ্লব সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট নয়। তাই সহজ কথাও আমরা বুঝি না। কিন্তু ইতিহাস কাউকে ছাড় দেয় না।”
সূত্র: ফরহাদ মজহারের ফেসবুক পেজ
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: