রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেছেন, "বর্তমানে অনেকে নানা ধরণের গুজব ছড়াচ্ছে যে অমুকে এই কারসাজি করছে তমুকে সেই কারসাজি করছে। আমরা প্রশাসনে এবং নির্বাচন কমিশনে যারা আছি তারা কারসাজির 'ক' ও বুঝিনা। আমি এটি নিশ্চিত করে বলতে পারি যে, সারাজীবনে আমি কোনো কারসাজি করিনি এবং ভবিষ্যতেও কোনো কারসাজির সঙ্গে যুক্ত হবার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা আমার নেই। কাজেই এই আস্থাটা আপনাদের
আজ সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে 'রাকসু কি এবং কেন' শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
উপাচার্য আরও বলেন, "প্রায় ৩৫ বছর পর আমরা রাকসু নিয়ে কাজ করছি। সবার সহযোহিতায় আমরা আশা করছি যে একটি সুন্দর পরিবেশে আগামী ২৫ তারিখ রাকসু নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারবো। আমরা যে পর্যায়ে এসেছি এখানে আশাটা সহজ ছিলনা, সকলের দাবিদাওয়া বাধা-প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে আমরা এই পর্যন্ত এসেছি। সবাই সহযোগিতা করলে বাকি পথটুকুও আমরা সঠিকভাবে পাড়ি দিতে পারবো। আমরা আমাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন আছি। আমাদের মূল দায়িত্ব হলো একটি ভালো পরিবেশে সকলের জন্য একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে দেওয়া এবং ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন অনুষ্ঠিত করা।
তিনি আরও বলেন, "এই ইলেকশনে কে হারবে জিতবে, কাদের কী মতাদর্শ সেটি আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমরা শুধু চাই আমাদের ছাত্রছাত্রীরা যেন নির্ভয়ে তাদের তাদের ইচ্ছা-আকাঙ্খাগুলো প্রকাশ করতে পারে এবং ভোট দিতে পারে। প্রার্থী ও তাদের টিমের কাছে আমার একটাই অনুরোধ, নির্বাচনের আচরণবিধিগুলো তোমরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে। সকলেই একটা জিনিস মনে রাখবেন যে জিততে গেলে হারতে শিখতে হয়। যিনি হেরে গেলেন তিনি এইটা-সেটা বলে পরিবেশ নষ্ট করাটা আমাদের একটি জাতীয় প্রবণতা। হারলেই খেলা ভালো হয়নি, এমন অ্যাটিচিউডের থেকে বাজে অ্যাটিচিউড দুনিয়াতে আর একটাও নেই। আমি আশা করছি আমাদের শিক্ষার্থীরা এমন এটিচিউড নিয়ে থাকবেনা।
সেমিনারে অধ্যাপক ড. পারভেজ আজহারুল এর সঞ্চালনায় প্রধান আলোচক অধ্যাপক ড. আব্দুল হান্নান বলেন, "ডাকসু জাকসু নির্বাচন হওয়ার পর রাকসু এখন সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। রাকসু, হল সংসদ ও সিনেট -এ ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। ছাত্রদের দাবি-দাওয়া গুলো প্রশাসনের কাছে তুলে ধরা বা চাপ প্রয়োগ করে দাবি আদায় করার জন্য রাকসু নির্বাচন অপরিহার্য। এছাড়াও, যারা সিনেট সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হবে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট, উপাচার্য নিয়োগসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশগ্রহণ করবেন। আশা করি সকলে মিলে আমরা একটি সুষ্ঠু -সুশৃঙ্খল নির্বাচন উপহার দিতে পারবো।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন খান বলেন, "আমাদের সব প্রস্তুতি শেষ, এখন শুধু অপেক্ষা করছি ২৫ তারিখের জন্য। বিস্ময়ের বিষয় হলো—এই ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেশ-বিদেশে যে পরিমাণ সাড়া ফেলেছে, তা সত্যিই আশ্চর্যজনক। আমাদের বর্তমান প্রজন্ম অনেকদিন ধরে ভোট দেখেনি, সে কারণেই তাদের মধ্যে এতটা আমেজ কাজ করছে। নিষিদ্ধ পণ্যের মতোই পড়ে ছিল রাকসু। আমরা দীর্ঘদিন ধরে রাকসুকে সামনে আনতে পারিনি। এখন আমরা সুযোগ পেয়েছি, আর এ নির্বাচনকে ঘিরে সারা দেশের মানুষের মধ্যে এক ধরনের উৎসবমুখর আমেজ তৈরি হয়েছে।"
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাবি উপাচার্য ও রাকসুর সভাপতি অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন খান। এছাড়াও সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. মো. নিজাম উদ্দীন ও অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল আকন্দ। কী -নোট স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাকসুর কোষাধ্যক্ষ ও প্রধান রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. মো. সেতাউর রহমান। প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী ও প্রার্থী উপস্থিত সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: