গাজীপুরের কালিয়াকৈরে শিশু ধর্ষণের ঘটনাসহ ক্রমবর্ধমান নারী নির্যাতনের বিচার এবং ধর্ষণ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্থা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা।
সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ মানববন্ধন করেন তারা। এসময় তাদের বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায়৷ প্ল্যাকার্ডগুলোতে ‘আমার বোন ধর্ষিতা কেন? বাংলাদেশ জবাব চাই', ধর্ষকের বিচার চাই', ‘ধর্ষকের কোন ধর্মীয় পরিচয় নেই দর্শকের', ধর্ষকের পরিচয় সে ধর্ষক, ‘ধর্ষকের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না', নো মোর র্যাপ ইত্যাদি স্লোগান লিখা ছিল।
মানববন্ধনে জুলাই-৩৬ হলের নব-নির্বাচিত সহ-বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক ও ইসলামি ছাত্রীসংস্থার কর্মী ফাতেমাতুস সানিহা বলেন, ‘এই দশ মাসে চার হাজার একশত পাচটি ধর্ষণের মামলা হয়েছে৷ এর মধ্যে বেশিরভাগ মামলারই সুষ্ঠু বিচার হয়নি। কালিয়াকৈরে যে ১৩ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে, সে একজন মাদ্রাসা ছাত্রী, সে কোনো মিডিয়া হাইপ পায়নি। তার ধর্ষকেরও কোনো বিচার হয়নি। নরসিংদীতে ১৪ বছরের এক শিশুকে ৭দিন আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করা হয়েছিলো, তারও কোনো বিচার হয়নি। আমরা নারীদের আসলে কোনো জায়গায় নিরাপত্তা নেই, হাসপাতালে নারীরা ধর্ষিত হচ্ছে, টিউশন থেকে ফেরার পথে নারীরা ধর্ষিত হচ্ছে তাহলে আমরা যাবো কোথায়?
তিনি আরো বলেন, আজকে আমাদের এখানে দাঁড়ানোর প্রধান দাবিটা হলো—রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় আইন অনুযায়ী ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই যেন ধর্ষণ করার আগে ওই শাস্তির কথা মনে পড়ে।
আমরা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ একটা দেশ, সেখানে মনে হচ্ছে মুসলিম পরিচয়টাই যেন বোঝা হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থার রাবি শাখার রহমতুন্নেসা হল শাখার সহ-নেত্রী সাইফুন নাশীদা। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি ধর্ষকের কোনো নির্দিষ্ট ধর্মীয় পরিচয় নাই। যখন কোনো ধর্ষক ধর্মীয় পরিচয় দিয়ে ঘটনাটি আড়াল করতে চায়, আমরা মনে করি সে একজন কুচক্রী লোক। তারা চায় এদেশের নারীরা ধর্ষিতা হোক, নারীরা নিরাপত্তা হীনতায় ভুগুক। গাজীপুরে যে ঘটনাটি ঘটেছে আমরা মনে করি সে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী, এই জন্য সঠিক বিচার ও মিডিয়া কাভারেজ, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার প্রচারণা পাচ্ছে না। সেজন্যই হয়তো আমরা প্রশাসন কিংবা মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছি না। সাম্রতিক সময়ে আমরা দেখেছি যে, পূজার সময়েও একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে কিন্তু তার কোনো বিচার ও পাইনি। কালিয়াকৈরে যে ঘটনাটা ঘটেছে সেটা বলা হচ্ছে প্রেমেরে সম্পর্ক, প্রেমের সম্পর্ক হলেই কী বিচার হবে না?
মানববন্ধনে ইসলামী ছাত্রীসংস্থা রাবি শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: