রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ-২০২৫ নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনে আলোচনায় বসছেন অর্থ উপদেষ্টা ও বিসিএস (কর) এবং বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারের প্রতিনিধিরা। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকেল ৫টায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
বুধবার (২৫ জুন) অর্থ মন্ত্রণালয় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আলোচনার উদ্দেশ্য হলো চলমান বিভ্রান্তি ও ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে সব পক্ষের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা। অর্থ উপদেষ্টা এনিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময়ের আহ্বান জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে দেশের সুশীল সমাজ, অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী সংগঠন এবং উন্নয়ন সহযোগীরা রাজস্ব কার্যক্রমের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজস্ব নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কাজ পৃথক করার পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন। সেই প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার গত বছরের ৯ অক্টোবর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংস্কার নিয়ে একটি পরামর্শক কমিটি গঠন করে।
পরামর্শক কমিটির সুপারিশ পর্যালোচনার ভিত্তিতে ১৬ জানুয়ারি উপদেষ্টা পরিষদ রাজস্ব নীতি প্রণয়ন এবং রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমকে পৃথকীকরণের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এরপর সংশ্লিষ্ট দুই ক্যাডারের কর্মকর্তারা আলোচনা সাপেক্ষে খসড়া অধ্যাদেশ তৈরি করে এবং মার্চ মাসে তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে জমা দেন। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে ১২ মে অধ্যাদেশটি জারি করা হয়।
তবে অধ্যাদেশ জারির পর এনবিআরের কর্মকর্তারা এর বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামেন। এ অবস্থায় ২০ মে অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ১৩ প্রতিনিধির সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে অধ্যাদেশটি বাস্তবায়ন করা হবে।
এমনকি ২৫ মে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সংশোধনী আনা হবে। ওই ঘোষণার পর আন্দোলন স্থগিত করা হয়। তবে ২২ জুন থেকে আবারও আন্দোলনে নামে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
এ প্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবারের আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। সরকার আশা করছে, এই আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী সংস্কার বাস্তবায়নের পথ সুগম হবে।
এদিকে অর্থ উপদেষ্টা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে তারা নিজেদের দপ্তরে থেকে চলতি অর্থবছরের শেষ সময়ে রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে মনোযোগ দেন।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: