চিরহরিৎ উদ্ভিদ বাঁশ ঘাস পরিবারের বৃহত্তম সদস্য। একেকটি বাঁশঝাড়ে ১০ থেকে ৭০/৮০টি বাঁশ একত্রে বেড়ে ওঠে। সময়ের ব্যবধানে বাঁশঝাড়ে জন্ম নেয়া নরম অংশকে বলা হয় বাঁশ কোড়ল।
বাংলাদেশের বিশেষ করে পাহাড়ি অঞ্চলে বাঁশের কোড়ল দিয়ে নানা ধরনের সুস্বাদু খাবার তৈরি করা হয়। এর মধ্যে মুলি বাঁশের কোড়ল সবচেয়ে সুস্বাদু হিসেবে খ্যাত। স্বাদের পাশাপাশি স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও এর উপকারিতা অসীম। এজন্যই চীনের অধিবাসীরা বাঁশের কোড়লকে ‘স্বাস্থ্যকর খাবারের রাজা’ বলে অভিহিত করেন।
পুষ্টিগুণ
গবেষণা বলছে, বাঁশের কোড়লে রয়েছে ৮৮-৯৩% পানি, ১.৫-৪% প্রোটিন, ০.২৫-০.৯৫% চর্বি, ০.৭৮-৫.৮৬% চিনি, ০.৬০-১.৩৪% সেলুলোজ এবং প্রায় ১.১% খনিজ পদার্থ। এছাড়াও রয়েছে পর্যাপ্ত ভিটামিন।
স্বাস্থ্য উপকারিতা
বাঁশ পাতার রস শীতকালে কাশি কমাতে কার্যকর।
বাঁশ কোড়ল হাঁপানী রোগীদের সুস্থ থাকতে সহায়তা করে।
কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।
উচ্চ রক্তচাপ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও উপকারী।
সুস্বাদু রান্নায় বাঁশ কোড়ল
বাঁশ কোড়ল দিয়ে তৈরি করা যায় নানান পদ। এর মধ্যে জনপ্রিয় কিছু খাবার হলো—
বাঁশ কোড়ল শুটকি: সিদ্ধ করা কোড়ল কুচি করে কেটে শুটকি, পেঁয়াজ, তেল, লবণ ও মরিচ দিয়ে রান্না করা হয়। শুটকির বদলে চিংড়ি ব্যবহার করা যায়। চিংড়ি দিয়ে রান্না করলে নামানোর আগে জিরা গুঁড়া মেশাতে হয়।
বাঁশ কোড়ল-মাংস: মুরগি বা অন্যান্য মাংস রান্নার শেষ পর্যায়ে কোড়ল যোগ করলে তৈরি হয় সুস্বাদু পদ।
বাঁশ কোড়ল সালাদ ও স্যুপ: স্বাস্থ্যকর ও হালকা খাবারের জন্য সালাদ, দোপেঁয়াজা বা স্যুপে ব্যবহার করা যায়।
স্টার ফ্রাই বাঁশ কোড়ল: দ্রুত তৈরি করা যায় এবং খেতে অত্যন্ত মজাদার।
বিশেষ স্বাদ ও পুষ্টিগুণে ভরপুর হওয়ায় বাঁশের কোড়ল এখন পাহাড়ি অঞ্চলের সীমা পেরিয়ে সারা দেশের মানুষের খাবার তালিকায় জায়গা করে নিচ্ছে।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: