রাতভর শুষ্ক কাশি একদিকে যেমন অস্বস্তিকর, তেমনি এটি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় এবং গলায় চাপ সৃষ্টি করে। কাশির ওষুধ সাময়িক উপশম দিতে পারে, তবে প্রাকৃতিক ও পরীক্ষিত ঘরোয়া প্রতিকার দীর্ঘস্থায়ী স্বস্তি দিতে পারে। মধু, হলুদ, আদা ও পুদিনা পাতার মতো সহজ উপাদান প্রদাহ কমায়, শ্বাসনালীকে আর্দ্র রাখে এবং দ্রুত আরাম দেয়।
মধু
শুষ্ক কাশি প্রশমিত করার সবচেয়ে কার্যকর প্রাকৃতিক উপায় হলো মধু। এতে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান গলায় আবরণ তৈরি করে জ্বালা কমায় এবং কাশি দমন করে। আর্কাইভস অফ পেডিয়াট্রিক্স অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুদের রাতের কাশি কমাতে ডেক্সট্রোমেথরফানের চেয়ে মধু বেশি কার্যকর। দিনে কয়েকবার এক চা চামচ মধু খাওয়া বা হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে পান করা যেতে পারে। তবে এক বছরের কম বয়সী শিশুদের মধু না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
হলুদ
হলুদে থাকা কারকিউমিন যৌগটি প্রদাহ-বিরোধী, অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণে সমৃদ্ধ। এটি ব্রঙ্কাইটিস ও হাঁপানির মতো শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা উপশমে কার্যকর। ফ্রন্টিয়ার্স ইন ইমিউনোলজি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, কারকিউমিন শ্বাসযন্ত্রের প্রদাহ কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। শোষণ বাড়ানোর জন্য এক চিমটি গোল মরিচের সঙ্গে হলুদ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। গরম দুধ, চা বা কমলার রসে মিশিয়ে এটি পান করলে গলার জ্বালা ও শুষ্ক কাশি কমে।
আদা
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, জীবাণু ধ্বংস করতে এবং গলার প্রদাহ কমাতে আদা কার্যকর ভূমিকা রাখে। আদা চা বা কাঁচা আদা চিবিয়ে খেলে গলার জ্বালা প্রশমিত হয় এবং কাশির তাড়না কমে। গরম পানিতে কয়েক মিনিট আদা ভিজিয়ে রেখে তাতে মধু যোগ করলে এটি আরও উপকারী হয়।
পুদিনা পাতা
পুদিনায় থাকা মেন্থল গলার স্নায়ু প্রান্তকে শান্ত করে কাশি দমন করে এবং শ্বাসকষ্ট কমায়। পুদিনা চা রাতে ঘুমানোর আগে পান করলে আরাম পাওয়া যায়। এছাড়া পুদিনা তেলের বাষ্প নিঃশ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করলে বা ডিফিউজারে ব্যবহার করলেও কনজেশন ও কাশি থেকে দ্রুত উপশম মেলে।
এই প্রাকৃতিক উপাদানগুলো নিয়মিত ব্যবহার করলে ওষুধের ওপর নির্ভরতা কমে এবং গলার আরাম ফিরে আসে।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: