আগামী ৩ মে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সাধারণ নির্বাচন। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নের দিন ধার্য করা হয়েছে ২৩ এপ্রিল। এবারের নির্বাচনে প্রার্থীদের জন্য মাত্র ৯ দিন প্রচারণা চালানোর সুযোগ থাকবে।
এবারের নির্বাচনী প্রচারে মূল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, আবাসন চাহিদা, কর্মসংস্থান এবং বুড়িয়ে যাওয়া জনগণের জন্য বাড়তে থাকা স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা। এসব বিষয় নিয়ে সিঙ্গাপুরের ভোটারদের মধ্যে আলোচনা চলছে।
সিঙ্গাপুর ১৯৫৯ সালে স্ব-শাসন লাভের পর থেকে প্রতি নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসা ক্ষমতাসীন পিপল’স অ্যাকশন পার্টি (পিএপি) এবারও ক্ষমতায় ফিরবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ নির্বাচনে বিরোধী দল ‘ওয়ার্কাস পার্টি’ ইতিহাস সৃষ্টি করে ১০টি আসনে জয় লাভ করে। ১৯৬৫ সালে সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়া থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হওয়ার পর এটি ছিল বিরোধীদের সবচেয়ে বড় সাফল্য।
এবারের নির্বাচনে মোট ৯৭টি আসনে ভোট গ্রহণ হবে। ২০২০ সালে পিএপি ৯৩ আসনের মধ্যে ৮৩টি আসনে জয় পায়, যদিও সেই ফলকে আংশিক ধাক্কা হিসেবেই দেখছে তারা। ফলে এবারের নির্বাচনে আরও শক্তিশালী জয়ের লক্ষ্য নিয়ে তারা মাঠে নামবে।
একটি জরিপে জানা গেছে, সিঙ্গাপুরের ৪৪% নাগরিক ইতোমধ্যেই তাদের ভোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। এর মধ্যে ৬৩% পিএপির পক্ষে এবং ১৫% প্রধান বিরোধী দল ‘ওয়ার্কাস পার্টি’র পক্ষে ভোট দেবেন।
সিঙ্গাপুরের নতুন প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওয়েইয়ের জন্য এটি হবে প্রথম বড় নির্বাচনী পরীক্ষা। ফেব্রুয়ারিতে তিনি যে বাজেট ঘোষণা করেছেন, তা অনেকেই নির্বাচনের আগে ভোটারদের খুশি রাখতে ‘ফিল-গুড বাজেট’ হিসেবে দেখছেন।
সিঙ্গাপুরে এখন পর্যন্ত চারজন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করেছেন, এবং তারা সবাই পিএপি থেকে এসেছেন। প্রথম প্রধানমন্ত্রী লি কুয়ান ইউ ছিলেন আধুনিক সিঙ্গাপুরের রূপকার এবং তিনি ২৫ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। তার ছেলে লি সিয়েন লুং ২০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ২০১৫ সালে দায়িত্ব ছাড়েন।
সিঙ্গাপুরে ভোট দেওয়া বাধ্যতামূলক এবং দেশটির মোট ২৭ লাখ ৫০ হাজার যোগ্য ভোটার রয়েছে। সিঙ্গাপুরে ‘ফার্স্ট-পাস-দ্য-পোস্ট’ পদ্ধতিতে ভোট হয়, তবে বিরোধী দলগুলোকে কিছু বাড়তি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। এমপিরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ‘গ্রুপ রিপ্রেজেন্টেটিভ কনস্টিটুয়েন্সিস’ (জিআরসি) আসনে, যেখানে একাধিক এমপি নির্বাচিত হতে পারেন।
নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য প্রার্থীদের ১৩,৫০০ সিঙ্গাপুর ডলার জামানত দিতে হয়, যা ফিরে পেতে হলে প্রার্থীকে মোট ভোটের এক-অষ্টমাংশের বেশি ভোট পেতে হবে।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: