১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
আল-আকসা মসজিদ চত্বরে আবারও ইসরায়েলি অনুপ্রবেশ, উত্তেজনা ছড়িয়েছে জেরুজালেমে
‘জেরুজালেম দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত মিছিলের সময় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা আবারও জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ চত্বরে প্রবেশ করেছে। সোমবার (২৬ মে) এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। ঘটনাটি ঘিরে ওই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রায় দুই হাজার ইসরায়েলি আল-আকসা প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকায় প্রবেশ করে। তাদের মধ্যে ছিলেন ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ও কট্টর ডানপন্থী নেতা ইতামার বেন-গভির। তিনি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে নিজেকে মসজিদ এলাকায় প্রার্থনা করতে দেখা যায়। ভিডিওতে আরও দেখা যায় ইসরায়েলি পার্লামেন্ট সদস্য ইৎজাক ক্রুজার ও মন্ত্রী ইৎজাক ভাসেরলফ উপস্থিত ছিলেন।
বেন-গভির জানান, তিনি গাজা যুদ্ধ জয়ের প্রার্থনা করেছেন এবং হামাসের হাতে আটক ব্যক্তিদের মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেন।
এ সময় ইসরায়েলি মিছিলকারীরা মুসলিম কোয়ার্টার অতিক্রম করার সময় ‘আরব নিপাত যাক’ ও ‘তোদের বসতি জ্বলুক’— এই ধরনের উসকানিমূলক স্লোগান দেয় এবং স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালায়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই ছিলেন দখলীকৃত পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরের অবৈধ বসতির বাসিন্দা।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেম দখল করে ইসরায়েল। তবে আন্তর্জাতিক চাপে আল-আকসা মসজিদ চত্বরসহ মুসলিম ধর্মীয় স্থানগুলোর প্রশাসন মুসলিম কর্তৃপক্ষের অধীনে রাখার প্রতিশ্রুতি দেয় ইসরায়েল। বর্তমানে জর্ডানের ইসলামিক ওয়াকফ কাউন্সিল আল-আকসা চত্বরের প্রশাসনিক দায়িত্বে রয়েছে। ইসরায়েলি সুপ্রিম কোর্টও ওই স্থানে ইহুদি প্রার্থনা নিষিদ্ধ করেছে।
সোমবারের মিছিল থেকে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা UNRWA-এর সদর দপ্তরে হামলার অভিযোগও উঠেছে। সংস্থার এক কর্মকর্তা জানান, ইসরায়েলি বিক্ষোভকারীরা পুলিশের উপস্থিতিতেই কম্পাউন্ডে ঢুকে পড়ে। মিছিলে অংশ নেন পার্লামেন্ট সদস্য ইউলিয়া মালিনভস্কিও, যিনি UNRWA নিষিদ্ধে সক্রিয়।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো ভিডিওতে দেখা যায়, কিছু ইসরায়েলি কিশোর পতাকা হাতে মুসলিম দোকানিদের হয়রানি করছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে। যদিও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঠেকাতে বিপুল সংখ্যক সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন ছিল।
এই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক মহলে আবারও আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা ও ফিলিস্তিনি অধিকার নিয়ে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: