বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে। হাইকোর্ট আগামী বৃহস্পতিবার (২২ মে) বেলা পৌনে ১১টায় এই রিটের আদেশ দেবেন।
বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (২১ মে) প্রাথমিক শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন। অন্যদিকে ইশরাক হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
এর আগে মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুর ১টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা শুনানি হয়, এরপর তা মুলতবি করা হয়। বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ফের শুরু হওয়া শুনানি চলে সোয়া ৫টা পর্যন্ত। এরপর রায় ঘোষণার জন্য বুধবার নির্ধারণ করা হলেও পরে তা পিছিয়ে বৃহস্পতিবার নির্ধারণ করা হয়।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস বিজয়ী হন। তাপস শপথ নিয়ে মেয়রের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। সেই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন পান দুই লাখ ৩৬ হাজার ভোট, আর তাপস পান সাড়ে চার লাখের বেশি ভোট।
তবে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ইশরাক।
গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করা হয়। এরপর থেকে অতিরিক্ত সচিব শাহজাহান মিয়া প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
এমন প্রেক্ষাপটে চলতি বছরের ২৭ মার্চ নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল শেখ ফজলে নূর তাপসের বিজয় বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে বৈধ মেয়র ঘোষণা করেন। আদালত ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন। নির্বাচন কমিশন ২৭ এপ্রিল সেই গেজেট প্রকাশ করে।
এই গেজেট প্রকাশের পর ইশরাকের শপথ নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা। রফিকুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ নামে দুই ব্যক্তি গেজেট ও রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে হাইকোর্টে রিট করেন এবং শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চান। তারা বলেন, ট্রাইব্যুনালের রায় দ্রুত ও যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই দেওয়া হয়েছে এবং মেয়রের মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়ে যাওয়ায় রায়ের কোনো কার্যকারিতা নেই।
এদিকে ইশরাক হোসেনকে দ্রুত শপথ পড়ানোর দাবিতে তার সমর্থকরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের রায়ের দিকেই তাকিয়ে আছে সংশ্লিষ্ট মহল।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: