নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করলেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে কর্মসূচি আরও জোরদার করেছে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পূর্বঘোষিত এক ঘণ্টার কর্মবিরতির পরিবর্তে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থিত সচিবালয় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সাংবাদিকদের কাছে নতুন কর্মসূচি তুলে ধরেন ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান বাদীউল কবীর, মুহা. নূরুল ইসলাম ও কো-মহাসচিব নজরুল ইসলাম।

নতুন কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামী রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা—আলী ইমাম মজুমদার, ফাওজুল কবির খান ও সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের কাছে স্মারকলিপি দেবে কর্মচারীরা। পরদিন সোমবার স্মারকলিপি দেওয়া হবে আরও দুই উপদেষ্টা—আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের কাছে। পাশাপাশি মাঠপর্যায়ের সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের মাধ্যমেও স্মারকলিপি দেওয়া হবে।

এদিকে আন্দোলনরত কর্মচারীরা আশাবাদী, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফর শেষে দেশে ফেরার পর (শনিবার) বিষয়টির সমাধানে ‘ভালো সংবাদ’ পাওয়া যাবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ ইতোমধ্যে আন্দোলনকারীদের দাবি প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরার প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে, ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারাও, যারা বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো দেশব্যাপী কলমবিরতি পালন করেছেন। তারা উপসচিব পদে পদোন্নতিতে বৈষম্য দূর, মন্ত্রণালয় কাঠামোতে পেশাভিত্তিক সমতা এবং অন্য ১২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের প্রতিবাদ জানিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন।

এদিকে আন্দোলনরত কর্মচারীদের কর্মসূচিকে ‘বেআইনি সমাবেশ’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে কড়া সমালোচনা করেছে চট্টগ্রাম সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ। সংগঠনের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্টদের বদলি বা চাকরিচ্যুত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনের পর ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে ২৬ মে জারি করা হয়। এতে সংযোজিত ‘৩৭ক’ ধারায় কর্মস্থলে অনুপস্থিতি, কর্মবিরতিতে উসকানি, দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া ইত্যাদি অপরাধে কর্মচারীদের চাকরিচ্যুতি, পদাবনতি বা বরখাস্তের বিধান রাখা হয়েছে—যা নিয়ে সচিবালয়ের কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

ঐক্য ফোরামের নেতারা জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে সন্তোষজনক আশ্বাস না পাওয়া গেলে আন্দোলন চলমান থাকবে এবং রোববার আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।