ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ইসির প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপযুক্ত সময়ে সম্পন্ন করতে সরকার নির্ধারিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুরোদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ থেকে শুরু করে নির্বাচনী সীমানা নির্ধারণ, আইন সংশোধন, মালামাল সংগ্রহ ও আচরণ বিধিমালা প্রস্তুত—সব কিছুতেই কাজ চলছে জোরেশোরে।

নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ জানান, নির্বাচন সফলভাবে আয়োজন করতে নির্বাচনী আইনে কিছু সংশোধনী আনা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে যখনই নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত আসবে, তখনই কমিশন শিডিউল ঘোষণা করবে।

কমিশন সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা প্রস্তুত প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে তালিকা চূড়ান্ত হবে। পাশাপাশি ৭৬টি সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে ৬৩৮টি আবেদন জমা পড়েছে, যা চলতি সপ্তাহেই নিষ্পত্তি হতে পারে। এছাড়া নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের সময়সীমা আগামী ২২ জুন শেষ হচ্ছে।

গত ১৫ জুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়েই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের প্রস্তুতির দিকে মনোনিবেশ করছি। কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী কোন কাজ কখন শুরু হবে, তার ভিত্তিতেই আমরা এগোচ্ছি।”

নির্বাচনী মালামাল ক্রয়ের টেন্ডার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপার, কালি, সিল, খামসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংগ্রহে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ইসি। এর বাইরেও ভোটকেন্দ্র সংস্কার, ভোটার কেন্দ্র নির্মাণ এবং পর্যবেক্ষক নীতিমালা চূড়ান্ত করার কাজ চলছে।

এদিকে, গত বৃহস্পতিবার কমিশন সভায় ২০২৫ সালের নির্বাচন আচরণ বিধিমালার খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নতুন বিধিতে পরিবেশবান্ধব উপকরণ ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা এবং বিধি লঙ্ঘনে সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। পোস্টার ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর আগে এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিলেও, সম্প্রতি লন্ডনে বিএনপি নেতার সঙ্গে বৈঠকে জানিয়েছেন—প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে ২০২৬ সালের রমজানের আগেই নির্বাচন হতে পারে। সেই লক্ষ্যেই ইসি নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতিমূলক কর্মকাণ্ড জোরদার করেছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্বাচনকে ঘিরে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ, আইন ও নির্দেশিকা সংশোধন, কর্মকর্তা প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য কাজও চলছে। তারা আশা করছেন, সবকিছু সঠিকভাবে সম্পন্ন করে সময়মতো নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে।