[email protected] মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫
২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শিবগঞ্জে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে কর্মী খুন, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট

জাহিদুর রহমান

প্রকাশিত: ৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০৪
আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ০০:১২

নিহত যুবদল কর্মী নয়ন (সংগৃহীত ছবি)

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের বাবুপুর মোড়ে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মো. নয়ন আলী (৩৫) নামে এক বিএনপি কর্মী নিহত হয়েছেন।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত নয়ন আলী শিবগঞ্জ উপজেলার নয়ালাভাঙ্গা মোড়লটোলা গ্রামের মো. আব্দুল করিমের ছেলে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পূর্বশত্রুতার জেরে রবিবার সন্ধ্যায় বাবুপুর মোড়ে নয়ন আলীর ওপর অতর্কিত হামলা চালায় একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এ সময় দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থার অবনতি দেখে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রামেক) এ রেফার্ড করেন। তবে রামেকে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত্যুর পর রাতেই পুনরায় নিহত নয়ন আলীর বাড়িতে হত্যাকারীরা হামলা চালিয়ে ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। আগুনে বাড়ির একটি অংশ পুড়ে যায়। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত নয়ন আলী স্থানীয় বিএনপি নেতা আশরাফের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এলাকায় তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড জড়িত থাকার এমনকি ধর্ষণেরও অভিযোগ ছিল বলে দাবি এলাকাবাসীর।

একাধিক স্থানীয় সূত্রের জানা যায়, চাঁদা ও মাদক ব্যবসা সংক্রান্ত বিরোধ এবং দলের অভ্যন্তরীণ গ্রুপিংয়ের জেরে স্থানীয় বিএনপি নেতা আশরাফেরই অপর একটি গ্রুপ এই হত্যাকাণ্ড ও পরবর্তী বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগে জড়িত থাকতে পারে। তবে এসব অভিযোগ এখনো তদন্তাধীন।

নয়নকে কারা হত্যা করেছে জানতে চাইলে নিহত নয়নের মা জানান, সাত্তার, বাবুল (ঝাপড়া), খাইরুল (ঝাপড়া), ঢোড়বোনা গ্ৰামের সাহেব, রাজ্জাক, সুমনরা মেরেছে আমার ছেলেকে। আরোও অনেক চিনেন না বলেও জানান তিনি। তিনি আরও জানান, ওরা (খুনীরা) আমাদের বাড়িতে আগুন দিয়ে সব লুটপাট করে নিয়ে গেছে।


পরে স্থানীয়রা জানায়, নিহত নয়নের মা যাদের নাম বলেছেন তারা সবাই স্থানীয় বিএনপি নেতা আশরাফুল ইসলাম আশরাফের ঘনিষ্ঠ সহচর।

এই বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াসিম ফিরোজ বলেন, প্রতিপক্ষের হামলায় নয়ন নামে একজন ব্যাক্তি মারা গেছেন। আধিপত্য বিস্তার নাকি অন্যকিছুর কারনে হত্যা সেই বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। সন্ত্রাসী কার্যক্রমে যুক্ত থাকার অভিযোগে নয়নের নামে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।


ঘটনার পর পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

আলোকিত গৌড়/জে.আর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর