[email protected] সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
১ পৌষ ১৪৩২

কোরআন-সুন্নাহতে সাহসিকতার শিক্ষা ও নবীজির অনন্য দৃষ্টান্ত

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩০

ফাইল ছবি

সাহসিকতা উন্নত মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ এবং সম্মানের সঙ্গে সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচার অন্যতম শর্ত—এমন শিক্ষাই পাওয়া যায় কোরআন ও সুন্নাহতে। ইসলাম মুমিনকে সাহসী হতে উদ্বুদ্ধ করেছে এবং কোরআন মাজিদের বিভিন্ন আয়াতে সাহসিকতার অনুপম দিকনির্দেশনা তুলে ধরা হয়েছে।

কোরআন মাজিদে আল্লাহতায়ালা মুমিনদের সাহসিকতার সঙ্গে আল্লাহর পথে আত্মনিবেদনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সুতরাং যারা আখিরাতের বিনিময়ে দুনিয়ার জীবনকে বিক্রি করে, তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করুক। যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে যুদ্ধ করবে, অতঃপর নিহত হবে বা জয়যুক্ত হবে, (সর্বাবস্থায়) আমি তাকে মহাপুরস্কার দান করব।” (সুরা আন নিসা: ৭৪)।

নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনেও সাহসিকতার অসংখ্য দৃষ্টান্ত রয়েছে। তাঁর কথা ও কাজে সাহস, দৃঢ়তা এবং বীরত্বের প্রকাশ ছিল সুস্পষ্ট। কোরআনে আল্লাহতায়ালা তাঁকে উদ্দেশ করে বলেন, “(হে নবী!) আপনি আল্লাহর পথে লড়াই করুন। আপনার ওপর নিজের ছাড়া অন্য কারও দায়ভার নেই এবং মুমিনদের সাহস দিতে থাকুন।” (সুরা নিসা: ৮৪)।

ইতিহাসবিদদের বর্ণনা অনুযায়ী, শৈশব থেকেই সাহসিকতা নবীজির চরিত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। মাত্র কিশোর বয়সেই তিনি ‘ফিজার’ যুদ্ধে অংশ নেন। একই সঙ্গে দীর্ঘ সময় নির্জনে হেরা গুহায় অবস্থান করাও তাঁর দৃঢ় মনোবল ও সাহসিকতার প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

হাদিসের গ্রন্থগুলোতেও নবীজির সাহসিকতার বহু ঘটনা লিপিবদ্ধ রয়েছে। হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, একবার মদিনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে নবীজি নিজেই ঘোড়ায় চড়ে পরিস্থিতি যাচাই করতে যান এবং ফিরে এসে জানান, ভয়ের কোনো কারণ নেই। (সুনানে আবু দাউদ)।

যুদ্ধক্ষেত্রেও তাঁর সাহসিকতা ছিল অনন্য। হজরত আলী (রা.) বলেন, যুদ্ধ যখন তীব্র হতো, তখন নবীজি শত্রুর সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থান করতেন। উহুদ ও হুনায়নের যুদ্ধেও তাঁর দৃঢ়তা ও অবিচল অবস্থানের কথা সাহাবিরা বর্ণনা করেছেন

নবীজি নিজে যেমন সাহসিকতার আদর্শ স্থাপন করেছেন, তেমনি উম্মতকেও সাহসী হতে উৎসাহ দিয়েছেন। তিনি কাপুরুষতা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়ার দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে, তিনি দোয়া করতেন—“হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কাপুরুষতা থেকে আশ্রয় চাই।” (সহিহ বুখারি)।

ইসলামি চিন্তাবিদরা মনে করেন, কোরআন-সুন্নাহর এসব শিক্ষা ব্যক্তি ও সমাজ গঠনে সাহসিকতা, আত্মবিশ্বাস এবং নৈতিক দৃঢ়তা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর