নেতৃত্বকে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রদান করা এক বিশেষ নিয়ামত হিসেবে বর্ণনা করেছেন ইসলামি চিন্তাবিদরা। তাদের মতে, কেউ যদি এই নেতৃত্বের সঠিক মূল্যায়ন করতে পারে এবং আল্লাহর বিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করে, তবে তা তার পরকালীন মুক্তির এক বিশাল মাধ্যম হতে পারে।
কিন্তু কেউ নেতৃত্ব পাওয়ার পর আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে ক্ষমতার অপব্যবহার করলে তা ইহকাল ও পরকাল উভয় জীবনের জন্য ধ্বংস ডেকে আনতে পারে। এজন্য নেতৃত্ব লাভের পর দায়িত্বশীল আচরণ করা ও মানুষের হক আদায় করাকে মুমিনের প্রধান কর্তব্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আলেমরা বলেন, নেতৃত্বের অন্যতম সৌন্দর্য হলো অনুসারীদের সঙ্গে নমনীয় ও সদয় আচরণ করা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ দিয়েছেন—ঈমানদার অনুসারীদের প্রতি কোমলতার সঙ্গে আচরণ করতে। নেতা ও অনুসারীদের মধ্যে যখন পারস্পরিক সহানুভূতি বিদ্যমান থাকে, তখন আল্লাহর রহমত তাদের কাজে নেমে আসে। এতে নেতৃত্ব দৃঢ় হয় এবং সমাজে কল্যাণ প্রতিষ্ঠিত হয়। আর সহানুভূতি হারিয়ে গেলে আল্লাহর রহমত দূর হয়ে যায়, যার প্রভাব কাজে কর্মেও দেখা দেয়।
হাদিসে সহানুভূতির গুরুত্ব বারবার উল্লেখ করা হয়েছে। আয়েশা (রা.) বর্ণিত এক ঘটনায় রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন—সহানুভূতি কোনো কিছুতে যুক্ত হলে তা সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, আর তা বিচ্ছিন্ন হলে সেই বিষয়টি ত্রুটিযুক্ত হয়ে পড়ে। একইভাবে আবুদ দারদা (রা.)-র বর্ণনায় মহানবী (সা.) বলেন, যাকে নমনীয়তার অংশ দেওয়া হয়েছে, তাকে কল্যাণের অংশ দেওয়া হয়েছে; আর যে ব্যক্তি নমনীয়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে, সে কল্যাণ থেকেও বঞ্চিত হয়েছে।
এ কারণে ইসলামি আলেমরা নেতাদের উদ্দেশে বলেন—যদি আল্লাহ কারো ওপর নেতৃত্বের দায়িত্ব অর্পণ করেন, তবে তার উচিত সেই নিয়ামতের যথাযথ মূল্যায়ন করা, অনুসারীদের প্রতি দয়া ও কোমলতা প্রদর্শন করা এবং দায়িত্ব পালনে আন্তরিক থাকা। এতে আল্লাহ তার নেতৃত্বে কল্যাণ ও বরকত দান করবেন।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: