বন্ধুদের চায়ের আড্ডা, পারিবারিক আলোচনা কিংবা অফিসের গুরুত্বপূর্ণ মিটিং—জীবনের নানা পরিস্থিতিতে আমাদের আচরণই অনেক সময় নির্ধারণ করে দেয় আমরা কতটা পরিণত বা অপরিণত। কথাবার্তা, সিদ্ধান্ত ও আচরণের ভেতর দিয়েই মানুষ বুঝে নেয়—আপনি ম্যাচিউর নাকি ইম্যাচুউর। ঠিক কোন বিষয়গুলো একজন পরিণত মানুষকে আলাদা করে? চলুন জেনে নেওয়া যাক ম্যাচিউরিটির সাতটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।
১. অহেতুক তর্কে জড়ান না
পরিণত মানুষ সবসময় তর্কে জিততে চান না। কেউ ভুল যুক্তি দিলেও তিনি সব সময় সেটি প্রমাণ করতে যান না। বরং পরিস্থিতি বুঝে এড়িয়ে যেতে জানেন। অযথা তর্কে জড়ানোকে তিনি সময় ও শক্তির অপচয় মনে করেন। যেমন জারমেইন জ্যাকসনের কথায়, “You can’t argue with stupidity.”
২. কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন
পরিণত মানুষ ছোট ছোট বিষয়েও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে জানেন। “ধন্যবাদ” বা “আপনার সাহায্যে খুব উপকার হয়েছে”—এই সাধারণ কথাগুলোই সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় করে। কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মধ্য দিয়ে তিনি অন্যের অবদানকে সম্মান করেন।
৩. ক্ষমা করতে জানেন
ক্ষমা করা দুর্বলতার নয়, বরং শক্তির পরিচয়—এ বিশ্বাস পরিণত মানুষের মধ্যে স্পষ্ট। তিনি মানুষের ভুলের পেছনের পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করেন এবং সংশোধনের সুযোগ দেন। মহাত্মা গান্ধীর ভাষায়, “Forgiveness is the attribute of the strong.”
৪. অন্যের কথা ও অনুভূতি বিবেচনায় রাখেন
একজন ম্যাচিউর মানুষ কোনো কাজ করার আগে ভাবেন, এতে আশপাশের মানুষ কীভাবে প্রভাবিত হবে। নিজের সুবিধার পাশাপাশি অন্যের স্বার্থও তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। জনসমাগমস্থলে আচরণেও তাঁর সচেতনতা চোখে পড়ে।
৫. পরিবর্তনকে মেনে নেন
পরিবর্তনই উন্নতির চাবিকাঠি—এটা পরিণত মানুষ জানেন। নতুন সময়, নতুন চিন্তা ও নতুন প্রযুক্তিকে ভয় না পেয়ে তিনি তা গ্রহণ করেন। বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের মতে, “Intelligence is the ability to adapt to change.”
৬. দায়িত্বশীল হন
পরিণত মানুষ দায়িত্ব নিতে জানেন এবং নেওয়া কাজ শেষ করেন। কর্মক্ষেত্র কিংবা ব্যক্তিজীবন—দায়িত্বশীলতাই তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করে। উইনস্টন চার্চিলের ভাষায়, “The price of greatness is responsibility.”
৭. অন্যকে গুরুত্ব দেন ও ভালো শ্রোতা হন
ম্যাচিউর মানুষ জানেন, গুরুত্ব পেতে হলে আগে গুরুত্ব দিতে হয়। তিনি মনোযোগ দিয়ে অন্যের কথা শোনেন এবং ভিন্নমতকে সম্মান করেন। নিজের কথাই সবসময় সঠিক—এই অহংকার তাঁর মধ্যে থাকে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ম্যাচিউরিটি বয়সের সঙ্গে নয়, বরং আচরণ ও মনোভাবের সঙ্গে সম্পর্কিত। নিজেকে পরিণত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে এই গুণগুলো চর্চাই সবচেয়ে কার্যকর পথ।
সূত্র: স্পাইকস্টোরি
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: